মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিএনপির অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের মামলার আসামি নিত্য সরকারের (৫০) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।শনিবার (০৪ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান। পেশায় দিনমজুর নিত্য সরকার হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কালই এলাকার জগদীশ সরকারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার আন্ধারমানিক গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। এতে রিতার ঘরবাড়ি ভাঙচুরসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। এ ঘটনায় গতবছরের ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর থানায় মামলা করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন খান দুলাল। এতে সাবেক সাংসদ মমতাজ বেগমসহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলার ৩৯ নম্বর আসামি নিত্য সরকার। মামলার দিন রাতেই নিত্য সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
নিত্য সরকারের বড় মেয়ে পূজা সরকার জানান, আমার বাবাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে আমার বাবা, আমার মায়ের সঙ্গে একটু কথা বলতে চাইলেও পুলিশ তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। এছাড়া ঠিক মতো খাবার খেতে দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন পূজা।
নিহতের চাচাতো ভাই ইন্দ্রদেব সরকার আজ দুপুরে জানান, আমার দাদা নিত্য সরকারকে পোস্ট মর্টেমের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সেখানে পোস্ট মর্টাম শেষে কেরানীগঞ্জ থেকে একটি ছাড়পত্র দিলে লাশ আমাদের দেওয়ার কথা বলছে পুলিশেরা।
মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান বলেন, নিত্য সরকার রক্তশুন্যতাজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন। গত ৩১ ডিসেম্বর আমরা তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠালে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :