যশোরে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী হারিয়েছেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় জিডি করতে লাইন ধরেছেন, এবং এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি জিডি হয়েছে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায়।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় বিকেল পর্যন্ত ৩০০টিরও বেশি জিডি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে শহরতলী পুলেরহাট আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর এবং আশপাশের এলাকায় মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে মুসল্লিরা তাদের জিনিসপত্র হারিয়েছেন। মাহফিলের ভিড়ে পদদলিত ও ধাক্কাধাক্কির কারণে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিনে, শুক্রবার রাতে জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী তার বক্তব্য প্রদান করেন। তার আসার খবরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে পুরো মাহফিল এলাকায়। সকাল থেকে শীত উপেক্ষা করে মানুষ জামায়েত হতে থাকে এবং বিকেল থেকে মাহফিলের স্থান ছাড়িয়ে সড়ক ও মহাসড়কেও নারী, পুরুষ ও শিশুরা অংশ নেয়। দুপুরের পর সড়কে যানজট দেখা দেয়, ফলে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়। সব সড়কের ঢেউ গিয়ে মিশে পুলেরহাটে। মাহফিল প্রাঙ্গণে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। এদিন সন্ধ্যায় আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহও মাহফিলে বক্তব্য দেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার জানান, শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার সকাল ৩টা পর্যন্ত মোবাইল ও স্বর্ণালংকার খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ জিডি করেছেন। শুক্রবার রাত থেকেই চুরি বা মোবাইল হারানোর ঘটনা নিয়ে অসংখ্য মানুষ থানায় এসে জিডি করেন। যারা মোবাইলের ডকুমেন্ট প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পেরেছেন, তারা দ্রুত জিডি করেছেন। শনিবার সকাল থেকে থানায় ভিড় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জিডির সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, যশোরে তিন দিনব্যাপী বৃহৎ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রায় পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষ সমাগম করেছে। এই ভিড়ে অনেক মানুষের মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেকেই থানায় জিডি করেছেন এবং কিছু চুরির অভিযোগও এসেছে। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :