ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় টিকটকার জুটি অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন। এলাকার কিছু বখাটে যুবক জোরপূর্বক টিকটকার জুটির অশ্লীল ছবি তোলায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দিতে গিয়ে নিজেরাই উল্টোদিকে ধর্ষন মামলায় ফেঁসে গেলেন।
এমন ঘটনাটি ঘটে ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদি ইউনিয়নের বাবনাতলা এলাকায়। পুলিশ সাথের দুই ধর্ষক ও এলাকার চার বখাটে যুবক সহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী টিকটকার তরুণী শনিবার রাতে বেকায়দায় পড়ে সাথের দুজনের বিরুদ্ধে দুটি ধর্ষণ ও চুমুরদি এলাকার বখাটে যুবকদের বিরুদ্ধে একটি পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেন।
আটককৃতরা হচ্ছেন- ইউটিউবার আকরাম খান(২৫) সে উপজেলার চুমুরদি ইউনিয়নের চুমুরদি গ্রামের মৃত্যু আমজাদ খানের ছেলে, আরেকজন তরুণীর সাথের মধুখালী উপজেলার কাঁঠালবাড়ি গ্রামের সত্তার মোল্লা ওরফে সাগর মোল্লার ছেলে জুয়েল মোল্লা(৩০)।
পর্নোগ্রাফি মামলায় আটক অন্য আসামীরা হচ্ছে- চুমুরদি এলাকার বিএনপি নেতা আনোয়ার উদ্দিন মেম্বারের ছেলে সাইদুল মোল্লা(৩০), সিরাজ শরীফের ছেলে মামুন শরীফ(৩২), রশিদ মোল্লার ছেলে বাবু মোল্লা(৩০) ও ইউনুস মোল্লার ছেলে জুয়েল মোল্লা(২৫), এরা চারজনই চুমুরদি এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী বিবাহিত এক তরুণী সে ফরিদপুরের কানাইপুর করিম জুট মিলে চাকরি করে। গত মঙ্গলবার সকালে তাকে চুমুরদি এলাকার টিকটকার নামে খ্যাত আকরাম খান টাকার প্রলোভন দেখিয়ে একই একই এলাকা থেকে দুই নায়ক জুয়েল মোল্লা,সুজন মোল্লা ও নায়িকা হিসেবে ওই তরুণীকে বাছাই করে ভাড়ায় বামনাতলা এলাকায় নিয়ে আসে। সারাদিন টিকটক করে রাতে বাবনাতলা এলাকায় একটি বাসায় ওঠে পরে ওই নারীকে অন্য রুমে নিয়ে রাতভর ধর্ষন করে। পরের দিন বুধবার তরুণীকে আটকিয়ে রাখে অন্য আরেকটি বাড়িতে। বৃহস্পতিবার রাতে সাথের জুয়েল নামের টিকটকার রাতভর ধর্ষণ করে। সাথের আরেকজন সুজন সে পালিয়ে যায়।
ওদের চলাফেরায় এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে কয়েকজন যুবক তরুণী এবং নায়ক জুয়েলকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বিবস্ত্র করে অশ্লীল ছবি মোবাইলে ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। তরুণী ও নায়কদের টাকা পয়সা ও মোবাইল সেট হাতিয়ে নেয় স্থানীয় ওই বখাটেরা।
ইউটিউবার আকরাম ও জুয়েল ওই নারীকে ফুসলিয়ে বখাটেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দেওয়ার জন্য শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে থানায় আসে।
তরুণী ও টিকটকার দের কথাবার্তায় পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইউটিউবার দুইজন ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।
স্থানীয় বখাটেরা অশ্লীল ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে কিন্তু তারা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নাই। তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শনিবার রাতে ব্রিফিং করে বলেন, তরুণীর সাথে লোকেরাই ধর্ষণ করে উল্টা যারা অশ্লীল ছবি তুলেছে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দিয়েছিল পরে সাথের লোকের বিরুদ্ধেই ধর্ষণের মামলা হয়।
এ ঘটনায় শনিবার সারাদিন অভিযান চালিয়ে দুইজন ধর্ষক ও চারজন বখাটেদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। দুই ধর্ষকের নামে দুটি পৃথক ধর্ষণের মামলা হয়েছে অন্য চারজনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি মামলা হয়েছে। রবিবার(৫ জানুয়ারি) ধর্ষিতা ওই তরুণীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য ফরিদপুরে পাঠানো হবে এবং ছয় আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
একুশে সংবাদ////র.ন
আপনার মতামত লিখুন :