AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না


সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, অবিলম্বে ‍‍`প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভ্যুলেশন‍‍` ঘোষণা করা এবং সরকারকে এটি গ্রহণ করতে হবে। তারা দাবি করেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির মতোই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে সংস্কার প্রয়োজন এবং তারা মনে করেন, বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তার আগে কোনভাবেই নির্বাচন করা উচিত নয়।

ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বিনির্মাণ এবং ‍‍`প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভ্যুলেশন‍‍` জন-আকাঙ্ক্ষা অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুর শহরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "গত দেড় দশক ধরে খুনি হাসিনা আমাদের দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ভেঙে দিয়েছে এবং আমাদের দেশটাকে নেতৃত্ব শূন্যতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাদের বিভাজনের কারণে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, তারা ব্যর্থ হয়েছে। যেখানে তারা ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরতে হয়েছে।"

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "আগস্টের ৬ তারিখের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমরা কোনো দৃশ্যমান বিচার দেখতে পাইনি। ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, ২০১৪ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি, এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে নির্বাচনে যেভাবে কারচুপি করা হয়েছে, সেগুলিরও এখন পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি।"

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, "যদি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের কাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, তাহলে অবশ্যই এই বিচারগুলো সম্পন্ন করতে হবে।"

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেখি বিভিন্ন বিদ্রোহ হয়, সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়। আপনাদের বলি—আপনারা বাস্তবতা মেনে নেন। যতদিন ছাত্রসমাজ জেগে আছে, ততদিন এই খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ঢাকার মসনদে কে বসবে, আগে সেটি দিল্লি থেকে নির্ধারণ করা হতো।"

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, "যারা ক্ষমতার লোভে মানুষের রক্ত ও জীবনকে বিন্দুমাত্র মূল্য দেয় না, তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না বাংলাদেশের মানুষ। যদি এ দেশের মানুষের জীবনের দিকে কোনো শকুন দৃষ্টি দেয়, তবে তার চোখ উপড়ে ফেলব—সে দেশের ভিতরের শক্তি হোক বা বাইরের। আমরা আমাদের শহীদ ভাইদের হত্যার বিচার চাই। ওই শেখ হাসিনা দেশে আসবে, তবে সে এসে সরাসরি বিচার কাঠগড়ায় দাঁড়াবে এবং সেখানে দাঁড়িয়ে ফাঁসির মঞ্চে উঠবে।"

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অবশ্যই একটি যৌক্তিক সময় নির্বাচন হবে। তবে তার পূর্বে এই খুনি হাসিনা আমাদের এই দেশের সিস্টেমগুলোকে যেই ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই সিস্টেমগুলোকে সংস্কার করতে হবে।

আমাদের এই বাংলাদেশ আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা চোখে চোখ রেখে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করব। পৃথিবীর কোনো বহিঃশক্তি যদি আমাদের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের চেষ্টা করে, তাহলে আমরা সেই পররাষ্ট্রনীতি ছুঁড়ে ফেলব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দিয়েছি। সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি থাকতে হবে। এ অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। সেই ঘোষণাপত্রে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।’

কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন সোহেল রানা। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন হাসিব-আল ইসলাম, রিফাত রশীদ, আশরেফা, রাজেন্দ্র কলেজ শাখার প্রধান কাজী রিয়াজ, ফারহান আহসান অর্ণব, নাবিলা তালুকদার, তাহসিন হাসান দ্বীন, মাহমুদুল হাসান ওয়ালিদ, সানজিদা রহমান সমতা, জেবা তাহসিন, শাহ মো. আরাফাত প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় ফরিদপুরে বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী, সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই সকল সশস্ত্র হামলার সাথে জড়িত অপরাধীরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখনও অনেকে আমাদের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। আন্দোলনে আহত অনেকে পারিবারিক কারণে থানায় মামলা করতে পারেনি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আন্দোলনের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ দেশে আর মুজিববাদ ফিরে আসবে না।’

সমাবেশ শুরুর পর মঞ্চ থেকে নেমে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছাত্র আন্দোলনে ফরিদপুরের ৮ শহীদের পরিবার ও আহতদের খোঁজখবর নেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সাজিদ আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

ছাত্র সমাবেশ উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী সমর্থকরা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে যোগ দেন।

 

একুশে সংবাদ/এনএস

Link copied!