ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় পিজি হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডাক্তার জামাল উদ্দিন খলিফার বাগান বাড়ির কেয়ারটেকার দুর্বৃত্তের হাতে খুন হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের আলেখারকান্দা গ্রামে। নিহত কেয়ারটেকার আব্দুল ওহাব(৬০) তিনি পার্শ্ববর্তী তুজারপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মরহুম ডাক্তার জামাল উদ্দিন খলিফা গত পাঁচ বছর আগে তার গ্রামের বাড়ি আলেখারকান্দায় বিশাল একটি এরিয়া নিয়ে একটি দুতলা বিশিষ্ট ডুপ্লেক্স বাড়ি ও বাগান নির্মাণ করেন। ডাক্তার সাহেবের পরিবার সবাই স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করেন। মাঝেমধ্যে তারা গ্রামের ওই বাগানবাড়িতে ঘুরতে আসে। শুরু থেকেই বাগানবাড়িতে আব্দুল ওহাব নামের ব্যক্তিকে কেয়ারটেকার হিসেবে নিয়োগ দেন।
এই বাগান বাড়িতে সার্বক্ষণিক দেখাশোনার ভার থাকে কেয়ারটেকার ওহাবের উপর। ওহাব ওই বাড়িতে একাই থাকতো। তবে এখানে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
গত চার পাঁচ দিন ধরে ওই বাগানবাড়িতে কেয়ারটেকারের সাড়াশব্দ না পেয়ে এবং বাগান বাড়িটি অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। এদিকে ডাক্তার পরিবারের লোকজনরা কয়েক দিন ধরে কেয়ারটেকারকে মোবাইল ফোনে পাচ্ছিলেন না। তখন তারা আজ বুধবার(৮ জানুয়ারি) মালিক পক্ষরা কেয়ারটেকারকে তার মোবাইলে পাচ্ছে না। একপর্যায়ে তারা(মালিক পক্ষ) স্থানীয়দের সহায়তায় বাগানবাড়িতে খোঁজ নিতে বলেন।
আজ সন্ধায় বাগানবাড়ির বাউন্ডারি ওয়াল টপকিয়ে দুতলার একটি দরজা খোলা দেখে, স্থানীয়রা কয়েকজনে একসঙ্গে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে। তখন দোতলায় কেয়ারটেকার ওহাবের রক্তাক্ত হাত-পা বাঁধা অর্ধ গলিত মরদেহ দেখতে পায়। তখন স্থানীয়রা ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেন, ভাঙ্গা থানা পুলিশ রাত দশ টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে কেয়ারটেকার আব্দুল ওহাবের রক্তাক্ত অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন জানান, আনুমানিক গত পাঁচ থেকে ছয় বছর হবে বাগানবাড়িটি নির্মাণ করেন আমাদের এলাকার মরহুম ডাক্তার জামাল উদ্দিন খলিফা। তিনি সাবেক পিজি হাসপাতালের পরিচালক ছিলেন। কেয়ারটেকার হিসেবে আব্দুল ওহাব সারাক্ষণ ওই বাড়িতেই থেকে দেখাশোনা করেন। জনসাধারণের জন্য ওই বাড়িতে প্রবেশে নিষিদ্ধ ছিল। আমাদের ধারণা কোন নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা হয়তো তাদেরকে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় তাকে আক্রোশমূলক খুন করেছে। ওই বাড়িতে ডাকাতি হওয়ার কোন মালামালও ছিল না। শুধু ডুপ্লেক্স একটি বাড়ি ও একটি বাগান রয়েছে তার দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল আব্দুল ওহাব।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মোঃ আসিফ ইকবাল ও ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোকসেদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসিফ ইকবাল জানান, একজন কেয়ারটেকারকে সম্ভবত দুর্বৃত্তরা হত্যা করে দোতালায় ফেলে রাখে, দুই এক দিন আগে । তারপরেও আমরা একদল এক্সপার্সিট সিআইডি টিমকে খবর দিয়েছি, তারা আসলে তদন্তপূর্বক ভালো কিছু পাবো বলে আশা করছি। প্রাথমিক ধারণা মার্ডারই হবে।
একুশে সংবাদ////র.ন
আপনার মতামত লিখুন :