AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শ্রীমঙ্গলে জমকালো আয়োজনে উদ্বোধন হলো তিন দিনব্যাপী ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ ২০২৫


শ্রীমঙ্গলে জমকালো আয়োজনে উদ্বোধন হলো তিন দিনব্যাপী ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ ২০২৫

দেশের পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড’র উদ্যোগে ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় চায়ের রাজধানী ও পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ নামে জমকালো এক উৎসব। 

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) সংলগ্ন কালিঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (গ্রেড-১) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো. রেজা-উন-নবী, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদর্শন কুমার রায়।

অনুষ্ঠানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ ইসলাম উদ্দিনসহ জেলা ও উপজেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড পর্যটন শিল্পের প্রচার ও বিপণনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন উৎসব ও মেলা আয়োজনের সরকারি উদ্যোগের অন্যতম একটি উদ্যোগ ‍‍`হারমোনি ফেস্টিভ্যাল‍‍` ২০২৫। এ উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে শ্রীমঙ্গলে শুরু হওয়া মেলা আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

উদ্বোধন হওয়া হারমোনি ফেস্টিভ্যাল উৎসবে শ্রীমঙ্গল সংলগ্ন এলাকার ক্ষুদ্র ও নৃ-গোষ্ঠীর বর্ণীল জীবন ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ‘হারমোনি উৎসবে‍‍` যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএলও। এছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এ উৎসবের সফল বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। এই উদ্যোগ পর্যটনশিল্পের বিকাশে এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।

হারমোনি উৎসবে স্থানীয় বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণের প্রদর্শনীসহ এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু সব খাবারের ৫০টি স্টল বসেছে। প্রথম দিনে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরেন এই উৎসবে।

আয়োজকেরা জানান, শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন গন্তব্য, যেখানে টি ট্যুরিজম, ওয়াইল্ড লাইফ ট্যুরিজম, ব্যক ওয়াটার ট্যুরিজম, এথনো ট্যুরিজমসহ বিভিন্ন  ধরণের পর্যটন বিকাশের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে আগত ইন বাউন্ড ট্যুরিস্টদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রতি বছর শ্রীমঙ্গল এবং সংলগ্ন এলাকায় ভ্রমণ করে থাকেন। হারমোনি ফেস্টিভ্যাল এ অঞ্চলে বিদ্যমান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবনাচারের টেকসই রুপদান, ট্যুরিস্টদের অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের নতুন ট্যুরিজম প্রডাক্ট উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ আয়োজন শ্রীমঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকার ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীদের জীবনধারা, সংস্কৃতি, উৎপাদিত পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে পর্যটনশিল্পের বিশাল বিকাশ সাধন করবে বলে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।

দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এবারের উৎসবে নৃ-তাত্তিক জাতিগোষ্ঠী খাসিয়া, গারো, মণিপুরি, ত্রিপুরা, সবর, খাড়িয়া, রিকিয়াসন, বাড়াইক, কন্দ, রাজবল্বব, ভূঁইয়া, সাঁওতাল, ওঁরাও, গড়াইত, মুন্ডা, কুর্মী, ভুমিজ, বুনারজি, লোহার, গঞ্জু, কড়াসহ শ্রীমঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা অংশ নিচ্ছেন। উৎসবে সবর জনগোষ্ঠী ‘পত্র সওরা নৃত্য’ ও ‘চড়ইয়া নৃত্য’, খাড়িয়া জনগোষ্ঠী ‘খাড়ি নৃত্য’, রিকিয়াসন জনগোষ্ঠী ‘লাঠি নৃত্য’, বাড়াইক জনগোষ্ঠী ‘ঝুমুর নৃত্য’, কন্দ জনগোষ্ঠী ‘কুই নৃত্য’, রাজবল্বব জনগোষ্ঠী ‘উড়িয়া নৃত্য, ভূঁইয়া জনগোষ্ঠী ‘ভূঁইয়া গীত’, সাঁওতাল জনগোষ্ঠী ‘লাগড়ে নৃত্য, ওঁরাও জনগোষ্ঠী ‘ওঁরাও নৃত্য’, গড়াইত জনগোষ্ঠী ‘গড়াইত নৃত্য’, মুন্ডা জনগোষ্ঠী ‘মুন্ডারি নৃত্য’, কুর্মী জনগোষ্ঠী ‘কুরমালি নৃত্য’, ভূমিজ জনগোষ্ঠী ‘ভূমিজ নৃত্য’, বুনারজি জনগোষ্ঠী ‘উড়িয়া ভজন’, লোহার জনগোষ্ঠী ‘ভুজপুরি রামায়ন কীর্তন’, গঞ্জু জনগোষ্ঠী ‘গঞ্জু নৃত্য’, কড়া জনগোষ্ঠী ‘কড়া নৃত্য’, খাসিয়া জনগোষ্ঠী ‘ঐতিহ্যবাহী পোশাক ডিয়া কেরছা ও মালা পরিধাণের মাধ্যমে নাচ-গান’, ‘তীর-ধনুক প্রতিযোগিতা’, ‘সীয়াট বাটু’ (গুলতি দিয়ে খেলা), ‘কিউ থেনেং’ (তৈলাক্ত বাঁশে উঠার প্রতিযোগিতা), ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ‘কাথারক নৃত্য’, ‘বেসু নৃত্য’, ‘জুম নৃত্য’, ‘গ্যারি পুজা’, ‘ক্যার পুজা’, ‘নক থাপেং মা পুজা’, ‘কাদং’ (রনপা), গারো জনগোষ্ঠী ‘জুম নৃত্য’, ‘আমোয়দেব’ (পুজা), ‘গ্রীক্কা নাচ’ (মল্লযুদ্ধ), ‘চাওয়ারী সিক্কা’ (জামাই-বৌ নির্বাচন), ‘চাম্বিল নাচ’ (বানর নৃত্য), ‘মান্দি নাচ’, ‘রে রে গান’, ‘সেরেনজিং’ (প্রেম কাহিনীর গান), মণিপুরী জনগোষ্ঠী ‘রাসলীলা নৃত্য’, ‘পুং চলোম নৃত্য’ (ঢোল নৃত্য), ‘রাধাকৃষ্ণ নৃত্য’ এবং সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ধামাইল নৃত্য প্রদর্শন করা হবে। এছাড়াও খাসিয়া জনগোষ্ঠীর পান নিয়ে লাইভ পরিবেশনা, ত্রিপুরাদের কোমর তাঁত, মণিপুরিদের লাইভ তাঁত, চা ও রাবার প্রসেসিং, হোমস্টে, কুমারদের লাইভ মাটির জিনিসপত্র প্রস্তুত করা থাকছে।

একুশে সংবাদ/ এস কে

 

Link copied!