ফরিদপুরের কানাইপুরে ওবায়দুর খান নামের এক যুবককে দুই চোখ পেরেক দিয়ে উপড়ে ফেলা এবং পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর, বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার এলাকায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকালে নিহত ওবায়দুর খানকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই খায়রুজ্জামান খাজা। এ সময় তার দুই চোখে পেরেক ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলা হয় এবং পায়ের রগ কেটে ভেঙে দেওয়া হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
ওবায়দুর খান সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে ছিলেন এবং পেশায় কৃষি ও কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন। তার পাঁচ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও তার ভাই খায়রুজ্জামান খাজা সহ সকলকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
পরিবার ও স্বজনদের মতে, ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে ওবায়দুর খান কানাইপুর বিসিক শিল্পনগরীর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে যান। তখন পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকারে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত স্থানীয় খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ফরিদপুর জুট ফাইবারস মিলের পেছনে খাজার বাড়ির পাশে তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
এই সময় তার দুই চোখে লোহার পেরেক দিয়ে তুলে ফেলা হয় এবং বাম পায়ের রগ কেটে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রাত ৯টায় গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা এলাকায় তিনি মারা যান।
নিহতের বাবা বিল্লাল খান বলেছেন, “আমরা বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফের লোক। শুক্রবার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। যদি খাজার ফাঁসি না হয়, তবে আরও মানুষ মরবে। খাজা ও আলতাব চেয়ারম্যান অর্ডার দিয়ে আমার ছেলেকে মারছে।”
এ বিষয়ে, শনিবার সন্ধ্যায় কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, “মরদেহ দাফন শেষে পরিবারকে আসতে বলা হয়েছে, রাতেই হত্যা মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। এছাড়া জড়িতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।”
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :