AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক পিটিয়ে পদত্যাগ আদায়


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,ঝালকাঠি
০৯:৩৯ পিএম, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক পিটিয়ে পদত্যাগ আদায়

ঝালকাঠির নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জেল হোসেনের বিরুদ্ধে ১৫ ছাত্রীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ এনে উত্তেজিত জনতা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং পদত্যাগে বাধ্য করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ সময় ঝালকাঠি সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, "ছাত্রীদের শাস্তির অভিযোগে জনতা প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জেল হোসেনকে আহত অবস্থায় তিনি নিজের গাড়িতে করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকেরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এলাকাবাসী জানায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি-সমর্থিত নেতা-কর্মীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জেল হোসেনের বিরোধ চলছিল। কমিটির সাবেক সদস্যরা আওয়ামীপন্থী থাকায় তারা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেন। তাই জেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস নতুন করে কমিটি করার নির্দেশনা দেয়। প্রধান শিক্ষক আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে সভাপতির নাম প্রস্তাব করে জেলা প্রশাসকের কাছে সম্প্রতি কমিটি দাখিল করে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবী আল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। গতকাল বুধবার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমানের কাছে ছাত্র ও অভিভাবকেরা একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে প্রধান শিক্ষক কিছুটা ক্ষুব্ধ হন।

ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছাত্রীদের অংশগ্রহণে নাচ-গানের মহড়া চলছিল। দুপুরে প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জেল হোসেন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নাচের মহড়ায় ভুল করার অজুহাতে অন্তত ১৫ ছাত্রীকে বেত দিয়ে পেটান। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কয়েকজন ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে শিক্ষার্থীদের চিৎকার শুনে অভিভাবক ও এলাকাবাসী ছুটে আসে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে প্রধান শিক্ষক নিজের কক্ষ বন্ধ করে বসে থাকেন।

এদিকে, ঘটনা জানতে পেরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম ও থানা থেকে পুলিশ আসে। পরে প্রধান শিক্ষক নিজ কক্ষ থেকে বের হতেই উপস্থিত লোকজন তাকে গণধোলাই দেয়। এক পর্যায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম তাকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন। পরে জনতা তার গাড়ি অবরুদ্ধ করে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে।

আহত ৭ শিক্ষার্থী ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। তারা সবাই সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির ছাত্রী। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুলতানা সোনিয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গেছে। ওদের প্যানিক কেটে গেলে সুস্থ হয়ে যাবে।’

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির আহত ছাত্রী জান্নাতী বেগম অভিযোগ করে বলে, ‘আমাদের নাচের মহড়া চলা অবস্থায় প্রধান শিক্ষক স্যার ভুল হওয়ার অজুহাতে হঠাৎ বেত দিয়ে পেটানো শুরু করেন। এতে অনেক ছাত্রী আহত হয়। অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।’

ঝালকাঠি বারের বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির পদপ্রত্যাশী আল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক স্বেচ্ছাচারী হয়ে আওয়ামীপন্থী লোক দিয়ে বিদ্যালয়ের কমিটি করতে চায়। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। জনতা তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।’

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জেল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাকে অন্যায়ভাবে লাঞ্ছিত করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’ 

 

একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস

Link copied!