গোমতী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের আসমানিয়া বাজার, নারান্দিয়া পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের প্রায় ৪০টি পরিবারের ৬০ বছরের পুরনো বাপ-দাদার ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙ্গনে ঝুঁকিতে রয়েছে আরও শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলী জমি। নদীভাঙ্গন রোধকল্পে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করা হলেও অদ্যাবধি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে নদী ভাঙনে বাড়িঘর হারানোর আতঙ্কে দিন পার করেছে নদীপাড়ের মানুষ। এদিকে নদীভাঙ্গন রোধের আবেদনটি ফাইল চালাচালির মধ্যেই আটকে পড়ে আছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
কুমিল্লা থেকে প্রবাহিত খরস্রোতা গোমতী নদীটি তিতাস উপজেলার সীমান্ত দিয়ে মেঘনা নদীতে গিয়ে মিশেছে। গত ১০/১২ বছর ধরে গোমতী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে তিতাস উপজেলার লালপুর, নারান্দিয়া ও খানেবাড়ীর গ্রামের অংশে বহু কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি, মসজিদ, স্কুল, বৈদ্যুতিক খুটি ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত বছরের প্রলয়ংকরী বন্যাকালে নদীভাঙ্গনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারান্দিয়া এলাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গোমতী নদীর করালগ্রাসে ইতোমধ্যে নারান্দিয়া পূর্ব, পশ্চিম ও আসমানিয়া বাজারের প্রায় ৪০টি বাড়ি ও অনেক চাষের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া পূর্ব পাড়ের বাসিন্দা মো. মহিউদ্দিন সরকার বলেন, আমার পুরো বাড়ি গোমতী নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। আমিন এখন অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকি। একই গ্রামের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, আমার বিল্ডিং নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এখন সরকার যদি ব্লক দিয়ে স্থায়ী ভাবে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়ে তাহলে আমার বাকী বাড়িটুকু থাকবে, তা না হলে বৃষ্টি আসলে তাও ভেঙে যাবে।
নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আরিফুজ্জামান খোকা বলেন, নদী ভাঙনে আমার ইউনিয়নের নদীপাড়ের মানুষগুলো চরম হতাশা ও উৎকন্ঠায় বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছে। আজ কয়েক বছর ধরেই পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করে আসছি গোমতী নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য, কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় বিলম্ব হচ্ছে। ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি করেছেন।
পাউবো`র কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন ওয়ালিউজ্জামান বলেন, নদীভাঙ্গন রোধকল্পে ব্যয়ের প্রাক্কলন করে ঢাকায় ডিজি অফিসে পাঠিয়েছি। অর্থ বরাদ্দ নেই। তাই কাজ করা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ হলে ডিজি অফিস আমাদের কাজের নির্দেশ দিবেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :