চেহারার সাথে ছবি মিলিয়ে পরিচয় যাচাই নয়, ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবীতে সমাবেশ করেছে নওগাঁ জেলা পর্দানশীল নারী সমাজ নামক একটি সংগঠন। সোমবার জেলার বিভিন্ন বয়সী ৫ শতাধিক নারী সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মুক্তির মোড়ে ঘন্টাব্যাপী সমাবেশ করেন। পরে তিন দফা দাবী জানিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে একটি স্মারকলিপি দেন।
দাবীগুলো হল-
১। বিগত ১৬ বছর যাবত যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২। পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসীর অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার প্রদান করা। সকল ক্ষেত্রে পরিচয় সনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর সেকেলে পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩। পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ায় সময় পুরুষ নয়, নারী সহকারী বাধ্যতামূলক রাখতে হবে।
জেলা পর্দানশিন নারীদের পক্ষে আহম্মদ নিহা ও নাদিরার সমন্বয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। মুখচ্ছবির অজুহাত দিয়ে পর্দানশীন নারীদের এই অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। “পর্দানশীন নারীরা বেপর্দা হলে শিক্ষা পাবে, নয়ত পাবে না” এমন অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, পরীক্ষার হলে পরিচয় যাচাইয়ের জন্য চেহারা ও ছবি মেলানোর জন্য সেকেলে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে একজন পর্দানশীন নারীর চেহারার ছবি বেগানা পুরুষ বারংবার দেখে বেপর্দার ঘটনা ঘটছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পুরুষ শিক্ষক ও পুরুষ স্টাফ দিয়ে সেই পর্দানশীন নারীর চেহারা ও ছবি মেলানো হচ্ছে।আবার অনেক অসাধু শিক্ষার্থী চেহারার মিলকে ব্যবহার করে পরীক্ষায় প্রক্সি দেয়ার মত ঘটনা ঘটায়। এ কারণে পর্দানশীন নারীকে বলা হচ্ছে, "তোমার চেহারা না দেখালে তোমাকে চিনবো কিভাবে?" অথচ চেহারা দেখানো ছাড়াও পরিচয় যাচাইয়ের সমস্যা সমাধানে ফিঙ্গারপ্রিন্ট (বায়োমেট্রিক) পদ্ধতি গ্রহণ করার দাবী জানায়।
তারা আরও বলেন, একজন নারী ছবি তুললে ২টি গুনাহ হয়। একটি ছবি তোলার গুনাহ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার গুনাহ। আবার ঐ ছবিটি পরবর্তীতে যতজন বেগানা পুরুষ দেখবে বেপর্দা হওয়ার গুনাহ তত বাড়তেই থাকবে। এমনকি মৃত্যুর পর ওই ছবির কারণে বেপর্দার গুনাহ জারী থাকবে। নারীদের পরিপূর্ণ পর্দা মেনে মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির দাবী শুধু দ্বীনি অধিকারের মধ্যে পরে না, প্রাইভেসীর অধিকারের মধ্যেও পরে। তাই অবিলম্বে পর্দানশীন নারীদের দ্বীনি অধিকার অক্ষুণ্ণ রেখে এনআইডি প্রদান করা হোক।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :