AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কেঁচো সার ব্যবহারে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা


Ekushey Sangbad
আব্দুল ওয়াহাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
০৩:১১ পিএম, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫
কেঁচো সার ব্যবহারে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা

রাসায়নিক সারের ব্যবহার ছেড়ে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) সারের দিকে ঝুঁকছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকেরা। রাসায়নিক সারের ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে গোমস্তাপুর উপজেলার কৃষকেরা এখন ব্যাপক হারে ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার শুরু করেছেন। ফলে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও শুরু হয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারের উৎপাদন।

জানা গেছে, জমিতে অতিমাত্রায় বালাইনাশক, আগাছা নাশক, কৃত্রিম রাসায়নিক সার ব্যবহার করায় দিন দিন মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই ভূমিকা রাখছে কেঁচো সার। বালাই নাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে বিনষ্ট মাটির উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম এই ভার্মি কম্পোস্ট। এরই মধ্যেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে নয় জন কৃষক স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেছেন। তাঁরা এসব উৎপাদিত সার নিজেদের জমিতে ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো) সার তৈরির উদ্যোক্তা কৃষক মোঃ সুমন আলী, তার নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় ছায়াযুক্ত স্থানে স্থানীয় কৃষি অফিসের আর্থিক সহায়তায় চৌগাছা স্থাপন করেছে। এতে পুরোনো গোবর আর কেঁচো দিয়ে রিংগুলো ঢেকে রেখেছেন। প্রতিটি চৌগাছায় দুই থেকে আড়াই হাজার কেঁচো রয়েছে। প্রথমে ৪০ থেকে ৪৫ দিন পর চৌগাছা থেকে ৩৫০০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। 

গোমস্তাপুর ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো কম্পোট সার প্রয়োগে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারে সেই ফলন পেতে চাষিদের গুনতে হয় তিন থেকে চার গুন টাকা।অন্যদিকে  এ সার তৈরিতে তেমন খরচ না হওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।

পার্বতীপুর ইউনিয়নের আরেক কৃষক ফাইজুদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার উৎপাদিত কম্পোস্ট সার আমি আমার জমিতে ব্যবহার করি। ব্যবহার করার পরে আমি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে বিক্রি করি।উৎপাদিত কম্পোস্ট সার ১৪-১৫ টাকা দরে নিজের চাহিদা মিটিয়ে উপজেলার বিভিন্ন কৃষকদের কাছে বিক্রি করি। এতে আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক লাভবান। তাই এই কেঁচো সার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছি।

গোমস্তাপুর ইউনিয়ন কৃষি অফিসের উপসহকারী শেখ মোঃ আল ফুয়াদ বলেন, কেঁচো সার ব্যবহারে মাটির জৈবশক্তি বৃদ্ধি পায় ও পিএইচ মান সঠিক মাত্রায় থাকে। এ ছাড়াও মাটির প্রকৃত গুণ রক্ষা করে, মাটির পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ফসলে পানি সেচ কম লাগে, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, মাটিকে ঝরঝরে করে ও বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করে, উদ্ভিদেও শেকড়ের মাধ্যমে শোষণক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে, বীজের অঙ্করোধগম শক্তি বৃদ্ধি করে ও গাছকে সুস্থ-সবল রাখে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে এতে কৃষকের চাষ খরচ অনেক কম হয়, ফসলের ফলন বৃদ্ধি ও পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার জানান, জৈব সার প্রদানের জন্য আমরা কাজ করেই যাচ্ছি উঠান বৈঠক, মাঠ দিবসেও কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকি। জৈব সারের উপকারিতা ধান, গম, পাটসহ বিভিন্ন শাক-সবজি, ফলবাগানে এ সার ব্যবহার করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আর এর ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে, মাটিতে বায়ু চলাচল বাড়ে। পানির ধারণক্ষমতা বাড়ে ও বিষাক্ততা দূরীভূত হয়। এছাড়া মাছ চাষের ক্ষেত্রে কেঁচো সার প্রয়োগ করে কম খরচে অতি দ্রুত সুস্বাদু মাছ উৎপাদন করে অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়। ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে। নিজেদের বাড়িতে পালিত গরুর গোবর অথবা সামান্য দামে গোবর কিনে এই সার উৎপাদন করা যায়। গোমস্তাপুর উপজেলা এই সার উৎপাদন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়া ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটি স্বাস্থ্যবান হয়। বিষমুক্ত শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো সার খুবই কার্যকর। একজন কৃষক এই সার একবার ব্যবহার করলে, তিনি নিজের তাগিদে এই সারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!