AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতায় যেতে চাই না, কেউ যাক সেটিও চাই না: শফিকুর রহমান


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট
০৮:১৩ পিএম, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫
তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতায় যেতে চাই না, কেউ যাক সেটিও চাই না: শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামী‍‍`র আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “তাড়াহুড়ো করে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না, কেউ তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতায় যাক সেটিও চাই না”।

তিনি বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) জয়পুরহাট সার্কিট হাউস মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

জামায়াতে ইসলামী‍‍`র আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “স্বাধীনতা পেলাম ৫৪ বছর। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় একটি জাতি বিশ্বের দরবারে মর্যাদাবান জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট সময় ছিল। কেউ যদি বলে স্বাধীনতার পরে এ জাতির জন্য ভালো কিছুই হয়নি, আমি একমত হবো না। অনেক কিছুই ভালো হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি ও দুঃশাসন না থাকলে, বাংলাদেশ অকল্পনীয়ভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতো। দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণে আমরা স্বাধীনতার সেই ফসলটুকু ভোগ করতে পারলাম না। সম্প্রতি দুঃশাসন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।”

শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের সম্মানিত সহকর্মী, সিরিয়াল করে এক থেকে এগারোজনকে আমাদের বুক থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। মহান রবের দরবারে দোয়া করি, আল্লাহ তোমার এই গোলামদেরকে বিশেষ ভালোবাসার গোলাম হিসেবে কবুল করুন। তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। জান্নাতের দরজা তাদের জন্য তুমি নির্ধারিত করে দাও। সম্মানিত ভাইয়েরা, তাদের ওপর যখন জলুম হয়, মিথ্যা অভিযোগে বিচারের নামে অবিচার করা হয়। তখন এদেশের লাখ-কোটি মুসলমান এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। এক এক করে অনেককে জালেমদের হাতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। অনেকে পুঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, অনেকে জেলে গিয়েছেন, অনেকে দেশ ছাড়া হয়েছেন। সারা বাংলাদেশের চিত্র এক এবং অভিন্ন। আমাদের শত শত ভাই-বোনকে খুন করা হয়েছে। বোনদের মাঝে আমাদের জয়পুরহাটেও একজন বোন ছিলেন, যাকে খুন করা হয়েছে। অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করা হয়েছে। দফায় দফায় মামলা দিয়ে রিমান্ড নিয়ে তাদেরকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে। তরতাজা যুবকদেরকে ধরে নিয়ে থানার ফ্লোরে চিৎ করে শুইয়ে রাইফেলের ব্যারেল ঠেকিয়ে তাদেরকে গুলি করে পা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। চোখে গুলি করে অন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ রকম শত শত ঘটনা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশকে তারা (আওয়ামী লীগ) নরকে পরিণত করেছিল। ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত তারা মানুষ খুন করেছেন। তারা সুস্পষ্ট গণহত্যাকারী। গণহত্যার বিচার আমরা চাই। প্রত্যেকটি গণহত্যার বিচার হতে হবে। আমরা সরকারকে বলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গণহত্যাকারীদের বিচার করুন। এতে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। আহতরা একটু শান্তি খুঁজে পাবে। আঠারো কোটি মজলুম মানুষ খুশি হবে।

শফিকুর রহমান বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) এক মাসের ভেতরে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষকে খুন করলেন। ছাত্র-জনতা এজন্য জীবন দেয় নাই যে, যেন-তেনভাবে ক্ষমতায় বসে যাব। তারা জীবন দিয়েছে একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে। একটা মানবিক বাংলাদেশ তারা দেখতে চায়। একটা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। এই দেশে আবার দুঃশাসন ফিরে না আসুক, তা তারা দেখতে চায়। তাই যদি করতে হয় তাহলে অর্থবহ নির্বাচনের দিকে যেতে হবে জাতিকে। আর সেই নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার সাধন করতে হবে। এজন্য জামায়াতে ইসলামী ৫ তারিখেই বলে দিয়েছে- এই সরকারকে আমরা যৌতিক সময় দিতে চাই। প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের জন্য। তাড়াহুড়ো করে আমরা নিজেরাও ক্ষমতায় যেতে চাই না। কেউ তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতায় যাক, সেটিও আমরা চাই না।

তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের আগে জাতিকে অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন, অনেক ইশতেহার দিয়েছেন। নির্বাচনের পর সব তারা ভুলে গিয়েছেন। জাতিকে দেওয়া ওয়াদা বাস্তাবায়নে তারা আগ্রহী ছিলেন না। আবার অনেকেই প্রতিপক্ষ দমনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। আপনি তো দেশ গঠন করবেন, আপনি দমনে ব্যস্ত হলেন কেন? দেশ গঠন হলে তো এমনি যার যেটা পাওনা বিচারের মাধ্যমে সেটা পাবে। নির্বিশেষ সমস্ত মানুষ উপকৃত হবে। এর কারণ দুটি, যারা ক্ষমতায় গিয়েছেন তারা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করতেন না। আদালতে, আখেরাতে আল্লাহ তায়ালার দরবারে তাদের দায়িত্বের জন্য, কর্তব্যের জন্য তাদের জবাব দিতে হবে। এই বিশ্বাস তাদের ছিল না। যদি থাকতো তাহলে তারা আল্লাহকে ভয় করে তারা চলতেন, তাদের হাতে জনগণের জীবন, সম্পদ, ইজ্জত সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতো। তারা জনগণকে বোকা মনে করে রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে কবুল করেছে। ক্ষুধার্ত হয়ে বসে থাকেন, কখন ক্ষমতায় যাব। আর পেট ভরে খাইতে খাইতে বদ হজমে পর্যন্ত পৌঁছাবে। বদ হজম হলো ক্ষমতা যখন চলে যায়, তখন পেটে চাপ দিলে সব মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। হচ্ছে না? অতীতে হয়নি? হচ্ছে, হয়েছে এবং হবে। এই পথে যারাই হাঁটবেন বেইজ্জতি তাদের কপালে অনিবার্য। অসম্মান-অপদস্থ তাদের থাকবেই। মানুষ কেন টাকা-সম্পদের গোলাম হবে? মানুষ তো আল্লাহর গোলাম হবে। প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষকে সম্মান করবে, ভালোবাসবে। সে যে ধর্মের হোক, ধর্ম দেখবে না। দেখবে তিনিও আমার মতো একজন মানুষ। আমার উচিত তাকে সম্মান করা, ভালোবাসা।

জামায়াতের আমির বলেন, অনেকে নির্বাচনের আগে ছেলের বাবাকে বাবা ডাকে, ছেলেকেও বাবা ডাকে। অনেকে বলেন এখন যে বাবা ডাকছেন নির্বাচনের পর মনে থাকবে তো? নির্বাচিত হওয়ার দেড় বছর পরে ওই ভদ্রলোক উনার সাথে একটু মোলাকাত করতে গেছে। বলে আপনাকে কোথায় দেখেছি মনে হয়। তখন বলে হ্যাঁ মানুষ তার বাবাকে ভুলে যায় এখন তা বুঝতে পারলাম। এগুলো ভেলকিবাজি-ধোঁকা। পাঁচ বছর স্মরণ থাকে, স্মরণ থাকে একটা জিনিস, আবার কীভাবে ক্ষমতায় আসতে পারবো। এজন্য ১৪ সালের নির্বাচনে মানুষ যায় না। নির্বাচন হয় ১৮ সালে, সেখানে নিশিরাতের নির্বাচন। নির্বাচন হয় ২৪ সালে, সেখানে হয় আমি আর মামু, আমি আর ডামির নির্বাচন। একই দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। মানুষকে নিয়ে তামাশা করা হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার, খাওয়ার অধিকার, শিক্ষার অধিকার সমস্ত অধিকার তছনছ করে ফেলা হয়েছে। আমরা সেই অধিকারগুলো দেখতে চাই, যে তা আবার মানুষের অধিকার মানুষের কাছে ফিরে এসেছে। এজন্য লুণ্ঠুনকারীদের ক্ষমতায় আর আনা যাবে না।

জেলা জামায়তের আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও বগুড়া অঞ্চল পরিচালক মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম খান। বিশেষ মেহমানের বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর বগুড়া অঞ্চল টিমের সদস্য মাওলানা আব্দুর রহিম, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জামায়াতের বগুড়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক, সিরাজগঞ্জ জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা শাহিনুর আলম প্রমুখ।

 

একুশে সংবাদ/এনএস

Link copied!