মাত্র কয়েকদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মালম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। সনাতন শাস্ত্র মতে, মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়। আগামী সোমবার বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে আরাধনা করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাই বিদ্যা দেবীকে আঁচড়ে সুন্দর রূপ দিতে দিনভর পরিশ্রম করছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের জফলারপাড় গ্রামের প্রতিমা শিল্পীরা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সরস্বতীপূজাকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তে দিন-রাত প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। মাটির কাজ শেষে রং দেওয়া এবং প্রতিমায় পোশাক ও অলংকার পরিয়ে দৃষ্টিনন্দনের কাজকরছের শিল্পীরা।
হিন্দুধর্ম মতে, বিদ্যার দেবী সরস্বতী। হিন্দু শিক্ষার্থীরা দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় প্রতিবছর পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করে থাকেন। এ পূজা উপলক্ষে হিন্দুধর্মবালম্বীদের বাড়িতে বাড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী মন্দির।
এদিকে, সরস্বতী দেবীর প্রতিমা বেশি দামে কেনার অভিযোগ উঠলেও প্রতিমা শিল্পীদের দাবী, মূর্তি তৈরি উপকরণ বাঁশ, কাঠ, ছন ও রং এর দাম বেড়ে যাওয়া খরচ গত বছরের চেয়ে একটু বেড়েছে।
উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের জবলারপাড় গ্রামের প্রতিমা শিল্পী বিলাশ কুমার সিংহ জানান, ‘সরস্বতী পূজা উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন মন্দির, আশ্রম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। এছাড়াও তাদের তৈরি এ প্রতিমা জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করা হয়। শীতকে উপেক্ষা করে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি করায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কাজের চাপে দম ফেলার সময় নেই তাদের। সরস্বতী দেবীর প্রতিটি প্রতিমা সর্ব নিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।’
দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে প্রতিটা জিনিষের দাম কম ছিল,এখন দাম বাড়ছেই শুধু। তাই একটু দামে বিক্রি করতে হচ্ছে ।’
অন্যদিকে প্রতিমা শিল্পী বিলাশ কুমার সিংহর মেয়ে অনুরাধা সিংহা জানান,‘বাবাকে সাহায্য করছি প্রতিমা তৈরীর কাজে। আর এটা আমাদের ঐতিহ্য।’
কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিবা চক্রবর্তী জানায়, ‘সে প্রতিবছর দেবীর কাছে বিদ্যার জন্য প্রার্থনা করে। এবারও বিদ্যালাভ ও দেশ-জাতির মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করবে সে।’
উপজেলার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রবিন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, ‘সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীরা দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় প্রতিবছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করেন।’
কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীত রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘উপজেলা সদর ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বাসা-বাড়িতে স্বরসতী পূজা উদযাপিত হবে। আশা করছি কোনো ধরণের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে জাঁকজমক পরিবেশে না হলেও সিমিত পরিসরে পূজা সম্পন্ন হবে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছে।’
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :