ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় দলের নারী পুরুষ সহ কমপক্ষে ২০ জন লোক আহত হয়েছে। আহত ১২ জনকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত ইদ্রিস মোল্লাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ফজেল মুন্সীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন । অন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এমন ঘটনাটি ঘটে রবিবার সকালে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ খাইরদিয়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘারুয়া ইউনিয়নের বিএনপি’র সাবেক সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন ও ঘারুয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লা এদের দুই জনের বাড়ি একই গ্রামে। এদের দুই দলের মধ্যে গ্রাম্য দলাদলি হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে দা-কুমড়া সম্পর্ক চলতে থাকে।
গত ২৫ জানুয়ারি ঘারুয়া ইউনিয়নে কৃষকদলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশে করিম মোল্লা তার এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করলে প্রতিপক্ষ আনোয়ার ও তার লোকেরা মিছিলে যেতে বাধা সৃষ্টি করে। সেই জের ধরে এলাকায় উভয় দলের মাঝে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।
গতকাল শনিবার আনোয়ার তার দল ভারী করতে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করে। সেখানে দাওয়াত দেওয়া দেয় ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নয়ন খা, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইয়াদ আলী মীর, আওয়ামী লীগ নেতা মন্নু ধ্বনি ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক চান মিয়াকে।
তারা দল গুছিয়ে পরের দিন (২ ফেব্রুয়ারি) আনোয়ার তার লোকজন নিয়ে প্রথমে তারা শরিফাবাদ বাজারে মহড়া দেয়। তখন করিম মোল্লার লোকজন ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে বাজার ত্যাগ করেন। পরে আনোয়ারের লোকজন ঢাল সরকি টাটা ও ইট পাটকেল নিয়ে করিম মোল্লার বাড়ির দিকে রওনা হয়। খবর পেয়ে করিম মোল্লার লোকজনও সঙ্গবদ্ধ হয়ে ধাওয়া করে।
এ সময় উভয় দলের মাঝে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, প্রায় ঘন্টা খানিক সময় এই পরিস্থিতি চলতে থাকে। এ সময় উভয় দলের নারী পুরুষ সহ কমপক্ষে ২০ জন সমর্থক আহত হয়েছে। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লা জানান, ৫ই আগস্ট এর পরে বিএনপির ইউনিয়ন সাবেক সেক্রেটারি আনোয়ার, আওয়ামী লীগের লোকজনকে সাথে নিয়ে আমাদের উপর অত্যাচার করে চলেছে, গত ২৫ জানুয়ারি আমাদের কৃষকদলের সমাবেশে মিছিল বের করলে আনোয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে বাধা সৃষ্টি করে। তারপরেও আমাদেরকে ফেরাতে পারে নাই, গতকাল শনিবার সে ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতিয়ার, বর্তমান সভাপতি নয়ন খা, এদেরকে নিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করে।
পরের দিন সকালে (২রা ফেব্রুয়ারি) প্রথমে তারা শরীফাবাদ বাজারে আমাদের লোকদেরকে ধাওয়া করে, সেখানে না পেয়ে তারা আমার বাড়িতে হামলা চালাতে ইট পাটকেল ছুড়ে, আমি তখন ইজ্জত বাঁচাতে লোকজন নিয়ে ধাওয়া দেই।
এ ঘটনায় বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জানান, নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক নিরু খলিফা তার লোকজন আমাদের নেতা কর্মীর উপরে হামলা চালায় ।
এদিকে ভাংগা থানার অফিসার ইনচার্জ মোকছেদুর রহমান জানান, খাদদিয়া গ্রামে রাজনৈতিক কোন বিষয় নয় মূলত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ হয়ে কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা শুনেছি, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, এখনো কোনো পক্ষের অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :