বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পরেই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন পরে নিজেদের জমিতে মৎস্য ঘের করার স্বপ্ন ভঙ্গুর হতে চলেছে রামপাল সদর ইউনিয়নের ওড়াবুনিয়া এলাকার বেশ কয়েটি সংখ্যালঘু পরিবারের।
বিএনপি নেতাদের হাত থেকে নিজেদের ভোগদখলীয় সম্পত্তি রক্ষার্থে গতকাল শনিবার(১ ফেব্রুয়ারি) ওড়াবুনিয়া এলাকায় মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু পরিবার। মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্ত সবুজ মন্ডল বলেন যে, দীর্ঘদিন পর এক ফ্যাসিস্ট সরকারের অবসানের পর তারা তাদের সম্পত্তিতে মৎস্য ঘের করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। সে সময় আরেকটি ফ্যাসিস্ট গ্রুপ আমাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে মৎস্য ঘের দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন যে, বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম টুকু, হিরক মনি, এস এম জাহাঙ্গীর আলম(মহুরী), সিরাজ মল্লিক ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব এস এম আলমগীর কবির বাচ্চুসহ তাদের লোকজন আমাদের জমি ও মৎস্য ঘের জোরপূর্বক দখলের পায়তারা করছে। সেইসাথে আমাদের নানাবিধ ভয়-ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে।
আরেক সংখ্যালঘু নীলকান্ত মন্ডল বলেন যে, প্রায় ১৭ বছর আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান হাওলাদার নাসির উদ্দীন আমাদের জমিতে জোরপূর্বক দখল করে মৎস্য ঘের করেছে। আমাদের জমির হারী বাবদ কোন টাকা দেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমরা নিজেদের জমিতে মৎস্য ঘের করতে চাইলেও বিএনপির প্রভাবশালী একটি গ্রুপ আমাদের জমি জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে দখলের চেষ্টা করছে। আমাদের নিজস্ব জমি যাতে কোন অপশক্তি গ্রাস করতে না পারে- সে জন্য প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছি।
ক্ষতিগ্রস্থ আরেক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য সুমন্ত বলেন যে, আওয়ামী লীগের আমলে তারা নিজেদের জমিতে ঘের করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের তাড়া করে ঘরে উঠিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম টুকুসহ তাদের লোকজন তাদের মৎস্য ঘের দখলের চেষ্টা করছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব এস এম আলমগীর কবির বাচ্চু’র কাছে জানতে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন যে, তিনি কোন মৎস্য ঘের করেননা। এছাড়া তিনি কারো জমি দখল করেন নাই। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা হিরক মনি জানান যে, আমাকে জড়িয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের মৎস্য ঘের দখল সংক্রান্ত যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। ওই স্থানে এমন কিছুই ঘটেনি। আমার এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়তা থাকায় একটি পক্ষ ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :