চট্টগ্রামে বৃটিশ আমলে তৈরি কালুরঘাট সেতুতে পুনরায় সংস্কারের পর আধুনিক রূপ পাওয়া কালুরঘাট সেতু দিয়ে চলাচলরত যানবাহনের টোল আদায় শুরু হচ্ছে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ–সম্পত্তি বিভাগ সেতু থেকে টোল আদায়ের জন্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে টেন্ডার আহ্বান করেছিল। টেন্ডারে মোট ৯টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে মাওয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আগামী ১ বছরের জন্য সাড়ে ৬ কোটি টাকা ইজারা দিতে রাজি হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ–সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মাহবুব উল করিম বলেন, রেলওয়ের শর্ত মোতাবেক কালুরঘাট সেতুর ইজারাদার প্রতিষ্ঠান এক বছরের ইজারার সকল টাকা পরিশোধ করেছে। আগামীকাল (বুধবার) আমাদের সার্ভেয়ার কানুনগোসহ গিয়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে সেতু বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এরপর থেকে সেতুর টোল আদায় শুরু হবে।
মাওয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলম ববি বলেন, কালুরঘাট সেতুর উপর দিয়ে চলাচলরত যানবাহন থেকে টোল আদায়ে রেলওয়ে গত ডিসেম্বরে টেন্ডার আহ্বান করেছিল। মোট ৯টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেছে। টেন্ডারে আমাদের মাওয়া এন্টারপ্রাইজ সর্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হয়েছে। টেন্ডারে সরকারি ডাকমূল্য ছিল ৩ কোটি ৮৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৪২ টাকা। টেন্ডারে মাওয়া গ্রুপ ৫ কোটি ২০ লাখ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এর সাথে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ৭৮ লাখ টাকা, ৫ শতাংশ আয়কর ২৬ লাখ টাকা এবং ২৬ লাখ টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দিতে হয়েছে। আজকে মঙ্গলবার ইজারার সকল টাকা (সাড়ে ৬ কোটি) পরিশোধ করেছি। বুধবার বিকালে রেল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সেতু বুঝিয়ে দেবেন এবং এরপর থেকেই (বুধবার বিকাল থেকে) সেতুর টোল আদায় শুরু হবে।
টোলের হার : সেতু পারাপারে বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা, ট্রাকের টোল ১৫০ টাকা, মাইক্রোবাস ৬০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫০ টাকা, জিপ ৫০ টাকা, সিএনজি টেঙি ২০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের টোল ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৯৪ বছরের পুরনো এ সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ আগস্ট। ১৪ মাস সংস্কার কাজ শেষে নতুন রূপ পেয়েছে শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুটি। গত বছরের ২৭ অক্টোবর সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত করা হয়। বুয়েট বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে সংস্কারের পর এখন মজবুত ও দৃষ্টিনন্দন হয়েছে সেতুটি।
৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির সংস্কার কাজ করেছে ম্যাঙ ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এক সময়ের ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে এখন কঙবাজারগামী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি যানবাহনও চলছে। প্রথমবারের মতো পুরনো এই সেতু দিয়ে পথচারী পারাপারের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করেছে রেলওয়ে। ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি দিয়ে ঢাকা–কসবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :