মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে পেয়াঁজ উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এসময়ে বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলে লোকসানের বোঝা অনেকটাই কমতো বলে মনে করছেন চাষিরা।
কৃষকরা বলছেন, চলতি বছরে বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ চাষে সবরমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। রোপন করার জন্য গুটি পেঁয়াজই কিনতে হয়েছে ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা মন। এখন সেই উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা মন দরে৷ এছাড়াও ঘন কুয়াশা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফলনও তুলনামূলক কম হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কৃষক এবং কৃষাণীরা পেয়াজ উঠানো এবং পেঁয়াজের মুড়ি কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা শিকদারপাড়া গ্রামের কৃষক আ. মান্নান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পেঁয়াজের দাম বেশ কম। আমি এবছর ৩ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছি। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও দাম এখন কম। বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা। বর্তমান দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে কোনরকমে উৎপাদন খরচ কিছুটা উঠবে। তবে লাভবান হতে পারবোনা। সরকার যদি এসময়ে বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখতো তাহলে লোকসানের বোঝা অনেকটাই কম হতো।
উপজেলার গালা ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের কৃষক সুবোধ সরকার জানান, তিনি এবছর আড়াই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে লোকসানের মুখে পরেছেন। গুটি পেঁয়াজ ক্রয়, শ্রমিকের মজুরি, সার-কীটনাশ সব মিলিয়ে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি প্রায় লাখ টাকার মতো। বর্তমান ১২০০ টাকা মন দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে।
উপজেলার সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের হাট ঝিটকা বাজারে ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে কৃষকদের মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা মন দরে। যা কিনা এক সপ্তাহ আগেও ১৬০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা মন দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের আমদানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দামেও ব্যপক দরপতন হয়েছে।
ঝিটকা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জবেদ আলী জানান, গত কয়েকদিনে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ব্যপক দরপতন হয়েছে। কদিন আগেও যে পেঁয়াজ ১৭০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা মন দরে ক্রয় করছেন সপ্তাহের ব্যবধানেই এখন তা ১২০০-১৩০০ টাকা মনে নেমে গেছে। বাজারে পেঁয়াজের আমদানি বৃদ্ধির কারণে দাম কমে গেছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, গতবছর পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় চাষিরা পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। যার কারণে এবার হরিরামপুরে লক্ষ্যমাত্রার বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে পেয়াজ সরবারাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে রমজান মাস আসলে দাম কিছুটা বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :