হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে পারিবারিক কলহের জেরে দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার আতিকপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—উপজেলার রানীগাঁও ইউনিয়নের আতিকপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের ছেলে আব্দুর রউফ এবং তার দুই মেয়ে খাদিজা আক্তার (৫) ও আয়েশা আক্তার (৩)।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক কলহের জেরে আব্দুর রউফের এই চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।
হবিগঞ্জের সহকারি পুলিশ সুপার (মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেল) একেএম সালিমুল হক স্থানীয়দের বরাতে জানান, আব্দুর রউফ ও তার স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত দাম্পত্য কলহ চলছিল। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তার স্ত্রী কোলের সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আব্দুর রউফ দুই শিশু সন্তান খাদিজা ও আয়েশাকে বিষ খাওয়ানোর পর নিজেও বিষ পান করেন।বিষয়টি আঁচ করতে পেরে প্রতিবেশীরা তাদেরকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আব্দুর রউফকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান।
নিহত আব্দুর রউফের ছোট ভাই সোহাগ মিয়া জানান, আমরা পার্শ্ববর্তী একটি ঘরে ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ করে চিৎকার চেচামেচির শুনে গিয়ে দেখি আমার দুই ভাতিজি ও ভাই বিষ ক্রিয়ায় অসুস্থ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সোহাগ আরও জানান, আমার ভাই ও ভাবির মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত নানা বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকত।
হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসাপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাফায়াতুল ইসলাম জানান, রাত ১টার দিকে আব্দুর রউফ বিষাক্রান্ত অবস্থায় হাসপাতালে আসেন। তার দুই শিশু সন্তানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আব্দুর রউফ চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে মারা যান।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :