জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা ঘিরে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পুনট ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিলে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুনট ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়কদের উপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের কণ্ঠ ভোটে ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কমিটি ঘোষণার পরপরই সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে এক পক্ষ প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নামে। তাদের অভিযোগ, ঘরে বসে রাতের অন্ধকারে পকেট কমিটি তৈরি করা হয়েছে, যা তারা কোনো ভাবেই মানবে না।
অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন দাবি করেন, "গঠনতন্ত্র মেনেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে একদল লোক পুনটে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, যা দলের শৃঙ্খলাবিরোধী।"
কমিটি বাতিলের দাবিতে সাবেক সাংসদ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ পুনট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হয়। তাদের প্রতিহত করতে ঘোষিত কমিটির পক্ষের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নেয়, ফলে মুহূর্তেই এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের আশঙ্কায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।
কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইফতেকার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, "আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও জানমালের ক্ষতির আশঙ্কায় রোববার বিকেল ৩টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পুনট বাসস্ট্যান্ডসহ পুরো পুনট ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।"
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "যদি কেউ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।"
সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান তালুকদার বলেন, "রাতের আঁধারে গোপনে কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা আমরা মানি না। গঠনতন্ত্র মেনে পুনরায় কমিটি ঘোষণা করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পুনটে গিয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসনের বাধার কারণে ফিরে আসতে হয়েছে।"
১৪৪ ধারা জারির পর পরিস্থিতি আপাতত শান্ত থাকলেও দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো মুহূর্তে পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকায় প্রশাসন কঠোর নজরদারিতে রয়েছে।
একুশে সংবাদ////র.ন
আপনার মতামত লিখুন :