নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার টেকনোয়াদ্দা এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গুলিবষর্ণে রাসেল আহম্মেদ (৩৩) নামের এক যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হারুন-অর-রশিদ নামের এক অস্ত্রধারীর ছোঁড়া গুলিতে সে আহত হয়।
জানা গেছে, কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা হারুন-অর-রশিদ ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে বেশ কিছুদিন ধরে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বাগেরআগা গ্রামে স্ব-পরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। এরই মধ্যে তিনি বাগেরআগা গ্রামের পার্শ্ববর্তী টেকনোয়াদ্দা এলাকার আক্কাস আলীগংদের কাছ থেকে টিনের মসজিদ এলাকায় আরো কিছু জমি ক্রয় করেন। আক্কাস আলী গংদের কাছ থেকে একই দাগে জমি ক্রয় করেন বাড়িয়াছনি গ্রামের সিরাজ আহম্মেদের ছেলে যুবদল নেতা শামীম আহম্মেদ।
এদিকে পূর্বাচল উপশহরের আওতাধীন মৌজার পূর্ণাঙ্গ জমির রেকর্ডিয় জরিপ কাজ চলছে। টেকনোয়াদ্দা মৌজার আংশিক জমি পূর্বাচল উপশহরের বাইরে রয়েছে। সে কারনে এখানকার জমি উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। বুধবার টেকনোয়াদ্দা মৌজার জমির জরিপ কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা টেকনোয়াদ্দা এলাকায় আসেন। খবর পেয়ে হারুন-অর-রশিদ ও শামীম আহম্মেদ টেকনোয়াদ্দা আসেন। একপর্যায়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে শামীম আহম্মেদের মধ্যে প্রথমে বাক্-বিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে হারুন-অর-রশিদের সমর্থিতরা রামদা, পিস্তল, এসএস পাইপ নিয়ে শামীম আহম্মেদের লোকজনদের উপর হামলা চালায়।
যুবদল নেতা শামীম আহম্মেদের লোকজন হারুন-অর-রশিদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তিনি মোবাইল ফোনটি উদ্ধারে চেষ্টা করেন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তখন উত্তেজিত হয়ে হারুন-অর-রশিদের প্রাইভেটকারে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যুবদল নেতা শামীম আহম্মেদকে গুলি করেন। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে শামীম আহম্মেদের সঙ্গে থাকা পার্শ্ববর্তী ভোলানাথপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে অপর যুবদল নেতা রাসেল আহম্মেদ ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবর্ষণের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে আশপাশের লোকজন দিকবিদ্বিগ ছুটোছুটি করে।
এসময় হারুন-অর-রশিদ যুবদলনেতা শামীম আহম্মেদকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। শামীম আহম্মেদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে প্রাইভেটকারে হারুন-অর-রশিদ পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ যুবদল নেতা রাসেল আহম্মেদকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টেকনোয়াদ্দা এলাকার সোহেল মিয়া (২৫) নামের এক যুবককে আটক করে। অস্ত্রধারী হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে যুবদল নেতা শামীম আহম্মেদ বাদী হয়ে হারুন-অর-রশিদকে নামীয় ও অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রূপগঞ্জ থানা ওসি লিয়াকত আলী বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :