AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নরসিংদীতে ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত সেই রিক্সাচালকের মৃত্যু


Ekushey Sangbad
সাব্বির হোসেন, পলাশ, নরসিংদী
০৩:০৬ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
নরসিংদীতে ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত সেই রিক্সাচালকের মৃত্যু

নরসিংদীর মাধবদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত রিক্সাচালক আইনুদ্দিন (৪০) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন

দীর্ঘ সাত মাস সাতদিন আহত থাকাকালী সময়ে আইনুদ্দিন ঢাকা মেডিকেল, দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল ও সবশেষ সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।


স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই নরসিংদীর মাধবদীতে পুলিশের গুলিতে আহত হয় রিক্সাচালক আইনুদ্দিন। তার স্ত্রী পুত্র বলতে কিছু ছিল না। বেশ কয়েকবছর আগে মাধবদী এলাকায় সে বিয়ে করলেও তার সেই সংসার বেশিদিন টিকেনি। তার স্ত্রী তাকে ফেলে অনেক আগেই চলে গেছে। নরসিংদীর মাধবদী পৌর শহরের বিরামপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে সে গত ২৬ বছর যাবত রিক্সা চালিয়ে আসছেন।নিহত আইনুদ্দিন দিনাজপুর জেলার পীরেরহাট বটতলী এলাকার বিলাত আলীর ছেলে।

নিহত আইনুদ্দিন ছোট ভাই জয়নুদ্দিন জানান, আহত আইনুদ্দিনের মাথায় কয়েকটি ছিটা গুলি লাগে। আহত হওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে সুস্থ হলে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে চলে যায় সে। সেখানে তার নিজের নামে থাকা চার শতাংশ জমি ছিল সেটা বিক্রি করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা নেন তিনি। জমি বিক্রির টাকায় ওষুধের খরচসহ আনুসাঙ্গিক খরচ চালাতো। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও তার চোখের আলো দিন দিন কমে আসছিল। মাঝে মধ্যে মাথার যন্ত্রনাটাও প্রকোট আকার ধারণ করে। সেসময় পার্শ্ববর্তী বেডের রোগির সাথে থাকা একজন ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেয় আহত আইনুদ্দিনকে।

পরে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় ঢাকায় এসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। সেই থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) তে নিয়ে যায়। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

আইনুদ্দিনের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ছয় ভাই বোন। মা মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন বাবা  ভিক্ষা করে যা পেতে তাই দিয়ে চলতো আমাদের সংসার।  টানাটানি সংসারে ১৪-১৫ বছর বয়সেই জীবন জীবিকার এ মুহূর্তে আমার যতটা মনে পড়ে ২০০০ সালের আগেই নরসিংদীতে চলে যায় আইনুদ্দিন। সেখানে রিক্সা চালিয়ে বাবা মার জন্য টাকা পাঠাতেন তিনি। অল্প বয়সেই তার আয়ের টাকায় একে একে তিন বোনের বিয়ের খরচ যোগান আইনুদ্দিন।

তিনি বলেন, সে যখন অসুস্থ হলো কেউ সাহায্য করতে পারিনি তাকে। নিজের জমি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ জুগিয়েছে সে। বিগত আন্দোলনের আহতরা সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সহযোগিতা পেলেও আমার ভাই আইনুদ্দিনের পাশে এসে দাঁড়ায়নি কেউ।
এসময় নরসিংদী কিংবা মাধবদী থেকে বিএনপি- জামায়াতের কোন নেতাকর্মী দীর্ঘ এই ৭ মাসের অধিক সময়ে রিক্সাচালক আইনুদ্দিনকে দেখতে আসেনি কেউ বলেও জানান তিনি।  

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে দুপুরের পর হাসপাতাল থেকে আইনুদ্দিনের মহদেহ নিয়ে তার ভাইয়েরা দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত ১০টায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পূর্ব জগদল গ্রামে গিয়ে পৌঁছায়। পরে রাত ১১ টায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ
 

Link copied!