দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে উৎপাদিত আলুর ন্যায্য দাম ও সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে উপজেলার কৃষকরা।
তারা জানিয়েছেন, বীজ আলু প্রতি কেজি ১০০ টাকা কেজি দরে কিনে জমিতে রোপণ করার কারণে আলু উৎপাদন-ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর বাজারমূল্য ১৩-১৫ টাকা। ফলে বিঘাপ্রতি কৃষকের লোকসান হচ্ছে ২০-২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে হিমাগারে বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য ভাড়া বৃদ্ধি করায় কৃষকের জন্য সেটা মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, এবার উপজেলায় ২ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আলুর চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খানসামা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে কৃষকরা আলু উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোনো কোনো কৃষক ধার দেনা পরিশোধ করার জন্য প্রতি কেজি আলু জমিতেই ১৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ফেলছেন, আবার কেউ কেউ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার জন্য হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছেন। আলু উত্তোলন করে অনেক কৃষক বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে তবে দাম কম থাকার কারণে উৎপাদন খরচ উঠাতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা।
উপজেলার আলু চাষী বুলবুল ইসলাম বলেন, আলুর ফলন খুবই ভাল হয়েছে। তবে যে দাম এই দামে লোকসান ছাড়া আর কিছুই নেই। সব কিছুর যে দাম, আবাদ মনে হয় ছেড়ে দিতে হবে। এর উপর হিমাগার মালিকরা আলু রাখার জন্য দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যে কোন দিকে যাবো, ভেবেই পাচ্ছি না।
আরেক আলু চাষী ইউসুফ আলী বলেন, বর্তমানে আলুর বাজার এত খারাপ, খরচ তো দূরের কথা ক্ষতি হচ্ছে বেশি। আমরা কৃষকরাই বারবার ক্ষতির সম্মুখীন হই। আমাদের দিকে নজর দেওয়ার কেউ নেই।
খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদন খরচ একটু বেশি।
এদিকে গত রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কৃষক ও আলু ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আন্দোলনে তোপের মুখে ইউএনও ফজলে এলাহী পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জে উপজেলার চারটি হিমাগার সীলগালা করে রেখেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, হিমাগার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :