দেশে যখন নতুন নতুন জাতের ফলনশীল জাত উদ্ভব হচ্ছে। ঠিক সে সময়ে বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রথমবারের মতো ৬৬ শতাংশ জমিতে সুপার ফুড কিনোয়া চাষে সফলতা খুঁজে পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা আবু জাফর। সুপার ফুড কিনোয়া চাষের মধ্য দিয়ে উত্তরের জেলা নওগাঁর নিয়ামতপুরে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেক চাষিরা কিনোয়া ফসলের ক্ষেত দেখে আগামীতে কিনোয়া চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিনোয়া হলো হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এটিকে সুপার ফুডও বলা হয়। কিনোয়ায় অ্যামিনো এসিড থাকে এবং লাইসিন সমৃদ্ধ যা সারা শরীর জুড়ে স্বাস্হ্যকর টিস্যু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিনোয়ায় আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-ই, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি অন্যতম উৎস। কিনোয়া রান্না করা হলে এর দানাগুলো আকারে চার গুণ বড় হয়ে যায় এবং দেখতে প্রায় স্বচ্ছ হয়ে যায়।
ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বরেন্দ্রভূমি নিয়ামতপুরে প্রথমবারের মতো কিনোয়া চাষ শুরু করেন আবু জাফর। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া এলাকার আলহাজ্ব ছাদরুল আমীনের ছেলে। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। এরপর প্রায় ৬৬ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু করেন সুপার ফুড কিনোয়া।
কৃষি উদ্যোক্তা আবু জাফর বলেন, ইউটিউব দেখে কিনোয়া চাষপদ্ধতি শিখি। সৈয়দপুর থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়। খরাপ্রবণ জমিতেই কিনোয়া চাষ সম্ভব। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৬৬ শতাংশ জমিতে বীজ বপন করেছি। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ফসল ঘরে তোলা যাবে।
তিনি আরোও বলেন, জমিতে তেমন রাসায়নিক সার বা কীটনাশক স্প্রে করতে হয় না। তবে জমিতে প্রচুর পরিমাণ জৈব সার দিয়ে জমি চাষাবাদ করতে হয়। স্বল্পমেয়াদি এই ফসল কম খরচে অধিক লাভজনক। প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৬ মণ কিনোয়া উৎপাদন সম্ভব। প্রতি কেজি কিনোয়া ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাট বাজারে সাধারণত কিনোয়া বিক্রি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বরেন্দ্রভূমিতে প্রথমবারের মত কিনোয়া চাষে সফলতার পথ খুঁজে পেয়েছেন আবু জাফর। কিনোয়া স্বল্পমেয়াদী ফসল। রবি শস্যের দানাদার ফসল। এবার কিনোয়ার ফলন ভালো হলে আগামীতে উপজেলায় আমরা চাষিদের কিনোয়া চাষে উদ্বুদ্ধ করবো। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় কিনোয়ার আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :