AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কালাইয়ে রাতভর চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে পাহারায় গ্রামবাসী


Ekushey Sangbad
আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই, জয়পুরহাট
০৫:২৭ পিএম, ৭ মার্চ, ২০২৫
কালাইয়ে রাতভর চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে পাহারায় গ্রামবাসী

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় চুরি,ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।একের পর এক সংঘটিত অপরাধের পরেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসীরা বাধ্য হয়ে নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেরাই তুলে নিয়েছেন। গত ৭ মাস ধরে উপজেলার ১৪৮টি গ্রামের অধিকাংশ গ্রামে রাতভর লাঠিসোঁটা ও টর্চলাইট হাতে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ।

গভীর রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায়,গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে কালাই উপজেলায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে ধারাবাহিকভাবে ডাকাতি ছিনতাই ও চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে।সাধারণ মানুষের মাঝে এক প্রকার আতঙ্ক বিরাজ করছে।১৪৮টি গ্রামের মধ্যে অধিকাংশ গ্রামেই স্থানীয়দের উদ্যোগে পাহারাদার কমিটি গঠিত হয়েছে।গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে চুরি ডাকাতি রোধে পাহারা দেওয়ার কাজে ছাত্র,যুবক,ব্যবসায়ী ও শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ একাজে জড়িয়ে পড়েছেন।সপ্তাহে প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন পুরুষ সদস্যকে পাহারার দায়িত্বে থাকতে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।পাশাপাশি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও এই কাজে যুক্ত রয়েছেন।পাহারা দেওয়ার জন্য ৬/৭ জনের দলে ভাগ করা হয়েছে, যেখানে একদল পাহারায় থাকলে অন্যরা বিশ্রাম নেন।গ্রামের প্রবেশপথ, গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং সন্দেহজনক স্থানগুলোতে দলবদ্ধভাবে অবস্থান নিচ্ছেন পাহারাদাররা। অপরিচিত কাউকে দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন মনে হলে তার নাম-ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে।এমনকি কিছু গ্রামে রাতের বেলা অচেনা ব্যক্তিদের চলাচল সীমিত করতে বাঁশের বেড়া পর্যন্ত বসানো হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান,২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে।অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় চুরি,ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে,যার মধ্যে রয়েছে দিনদুপুরে টাকা ছিনতাই,সংঘবদ্ধ দলের ডাকাতির ঘটনা, মহাসড়কে গাছ কেটে ফেলে গণডাকাতি,গরু চুরি, বেশকয়েকটি ট্রান্সফরমার চুরি,দিনেরবেলায় তিনটি মোটরসাইকেল চুরি এবং ভেরেন্ডি গ্রামে দিনেরবেলা ডাকাতরা পুলিশের ছদ্মবেশ ধারণ করে ৩ ভরি স্বর্ণ ও ৮০ হাজার টাকা লুট করে।সিসিটিভি ফুটেজে অপরাধীদের চেহারা স্পষ্ট ধরা পড়লেও পুলিশ প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেরাই নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে জানান গ্রামবাসীরা।ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়।

চরবাখড়া ও হিমাইল-বেশখন্ড গ্রামের জালালুদ্দিন ও ইদ্রিস আলি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা নিজেদের জানমাল রক্ষার্থে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি!কিন্তু এটা পুলিশের দায়িত্ব ছিল!

থুপসারা গ্রামের টিম লিডার তাজুল ইসলাম বলেন,দিনভর কাজ করে রাতে ঘুমানোর অধিকার আমাদের আছে।কিন্তু আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় আমাদের নিজেদেরকেই এখন জানমালের পাহারা দিতে হচ্ছে।

নওয়াপাড়া গ্রামের সাজ্জাদুর রহমান বলেন,গত কয়েক মাসে একের পর এক ডাকাতি,ছিনতাই আর চুরির ঘটনা ঘটছে।আমরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করি,কিন্তু পুলিশ শুধু আশ্বাস দেয়।আমরা আর আশ্বাস চাই না,অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচার চাই।

উৎরাইল গ্রামের ছানোয়ার হোসেন বলেন,এভাবে আর কতদিন চলবে?প্রশাসনের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। না হলে জনগণ তো একসময় আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।"

কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন জানান, আমরা চুরি,ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় অভিযান চলছে।ইতোমধ্যে কিছু অপরাধীকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়েছে।পুলিশ ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো।"

একুশে সংবাদ// এ.জে

Link copied!