রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপির বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইফতার মাহফিলের প্রধান অতিথি কে বরণ করা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মারাত্মক আহত গানিউল চিকিৎসা ধীন অবস্থায় রামেক হাসপাতালে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন সাবেক ছাত্র দলের নেতা মালেক মন্ডল।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসায় ধীন অবস্থায় মারা যান তিনি( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার এমন মৃত্যুর খবরে পরিবারসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে এরিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তার মরদেহ রামেক হাসপাতালের হিমঘরে আছে।
এদিকে গানিউলের উপর হামলা কারী উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপির বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমান ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক গোলাম মুর্তজার শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন সিনিয়র নেতারা। কারন হামলার নির্দেশ দাতা ছিলেন তারা। সেই সাথে এঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যারাই জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা সহ দলীয় পদ পদবি থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হোক। কারন তারা খুনি, তাদের হাতে রক্তের দাগ, তাদের হাতে দলের নেতাকর্মীরা নিরাপদ না। সেই সাথে মারপিটের আরেক মুলহোতা যিনি উপজেলা জুড়ে রাজত্ব করতে চাই সেই নামধারী নেতাকেও দল থেকে বহিষ্কার সহ শাস্তির দাবি উঠেছে।
গতকাল রাত থেকে রামেক হাসপাতালে অবস্থান করছেন সাবেক ছাত্র দলের সভাপতি মালেক মন্ডল। তিনি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, গানিউলের মাথাসহ পুরো শরীরে বেধড়ক পেটানো হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রামেকে গানিউলকে নেয়া মাত্রই চিকিৎসক জরুরি ভাবে আইসিইউতে নেয়ার নির্দেশ দেয়। আইসিইউ তে চিকিৎসা ধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মালেক আরো বলেন, গত মঙ্গলবার পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপির কৃঞ্চপুর মহিলা কলেজে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ইউপি বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন। ইফতারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজশাহী -১(তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন। তিনি কৃঞ্চপুর মোড়ে আসলে পাঁচন্দর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান একাংশের সভাপতি মমিনুল হক মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে ইফতারের মঞ্চে নিতে চান। এসময় ইউপি সভাপতি মানুষ গড়ার কারিগর প্রভাষক মজিবুর ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক গোলাম মুর্তজাসহ তাদের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। তারা পরিকল্পিত ভাবে মমিনকে হত্যা করতে চেয়েছিল। মমিন পাঁচন্দর ইউপির দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক সভাপতি ও বর্ষিয়ান নেতা। তার ছোট ভাই ওয়ার্ড বিএনপি নেতা গানিউলকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে মমিনকে তেড়ে তেড়ে পেটায়। মজিবুর গংরা কখনো জিয়ার আদর্শের সৈনিক হতে পারে না। তারা হত্যা কারি। তারা এবং তাদের কে যারা ইন্ধন দিয়েছে সবাইকে আইনের আওতায় আনা সহ দলীয় ভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যাতে করে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। তানাহলে খুনিরা খুনের ধারা অব্যহত রাখবে।
দলের নেতারা জানান, তানোর উপজেলায় বিএনপির এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু ইফতার পার্টিতে তুচ্ছ ঘটনায় মারপিট হয়নি। আর মজিবুর একজন প্রভাষক হয়ে কিভাবে হুকুম দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে। আর প্রধান অতিথি কেমন নেতা এখনো কোন ব্যবস্থা নিতে পারলনা। তার সামনে কর্মীরা কিভাবে মারপিট করে একজন মেরে ফেলতে পারে। আসলে রাজনীতি না করলে এমনই হয়। তিনি তো মেজর জেনারেল, রাজনীতির ক, খ বা গ,ঘ বুঝে না। এজন্যই তো মাঝেমাঝেই খবরের শিরোনাম হয় তানোর।গানিউলের মৃত্যুর খবরে পরিবারসহ গ্রাম ও ইউপির জনসাধারণের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হয় মারপিটের ঘটনায় কোন অভিযোগ হয়েছে কিনা তিনি জানান কোন অভিযোগ হয়নি।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান গত মঙ্গলবার ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য দিলেও মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মোবাইল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এবিষয়ে মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিনের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনিও রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার উপজেলায় পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপি বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব)শরিফ উদ্দিন কে বরণ করা নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিন ও প্রভাষক মজিবুর রহমান গ্রুপের সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :