কিশোরগঞ্জের ভৈরবে টিকটকে আসক্ত এক কিশোরীকে মোবাইল ফোন টিপতে বাধা দেয়ায় অভিমানে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া যায়।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে দিকে উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে নিহত কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে ভৈরব থানা পুলিশ।
নিহত কিশোরী মিনা বেগম। সে উপজেলার শিমুলকান্দি কান্দিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার মেরাজ মিয়ার মেয়ে। তিনি পরিবারে চার বোনের মধ্যে সে তৃতীয়।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কিশোরী মিনা দীর্ঘদিন ধরে টিকটকে আসক্ত। তবে সে রোজার মাসে প্রতিদিন তিনি রোজাও রেখেছিল। এমনকি কোরআন শরিফও পড়তেন। বিকালের দিকে কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে ঘরের কাজকর্ম নিয়ে তার বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জের ধরে সন্ধ্যার দিকে নিজবাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তার দাদু নামাজ পড়তে ঘরে গিয়ে দেখে সে ফাঁসিতে ঝুলে আছে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা ফাঁস থেকে নামিয়ে তার মাথায় পানি দেয়। এরপরে বাড়ির পাশে একটি ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে স্থানীয় চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নিহতের বড় বোন নুসরাত জাহান বলেন, আমার বোন অনেকদিন থেকেই টিকটকে আসক্ত ছিল। আমি বাধা দিলে টিকটক চালানো বন্ধ করে দিয়েছিল। আবারও সে মোবাইলে আসক্ত হয়ে যায়। দুপুরে মা মোবাইল রেখে ঘরের কাজকর্ম করতে বলে। এ সময় মায়ের সঙ্গে মিনার ঝগড়া হয়। পরে আমার চাচাতো ভাইও তাকে শাসন করে। এরপরে সে গোসল করে বাড়ির উঠানে হাঁটাহাঁটি করে। বিকালে ঘরে ঢুকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন সারা দিন রোজা রেখেছিল। সকালে কোরআন শরিফ পড়েছে। আমরা ভেবেছিলাম, সে বিকালে আসরের নামাজ পড়তে ঘরে ঢুকেছিল। পরে আমার দাদু নামাজ পড়তে গিয়ে দেখে মিনা ফাঁসিতে ঝুলে আছে।
নিহতের বাবা মেরাজ মিয়া বলেন, টিকটকে বেশি আসক্তির কারণে এর আগেও আমার মেয়েকে মোবাইল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। মাসখানেক আগেও সে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পরে তাকে আবারও মোবাইল দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, নিহত কিশোরীর মরদেহ আজ রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :