বাংলাদেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ কওমি মাদরাসা জামিয়া ইসলামিয়া নানুপুর ওবাইদিয়া মাদরাসায় প্রতি বছর রমজান মাসে অনুষ্ঠিত হয় চল্লিশ দিনের বিশেষ এতেকাফ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি আত্মশুদ্ধি, আমল-আখলাকের উন্নতি ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষের জন্য এখানে সমবেত হন।
কুতুবে জমান আল্লামা শাহ জমির উদ্দিন রহ. এর সময়ে চালু হওয়া এই ঐতিহ্য আজও বহমান। বর্তমান মহাপরিচালক আল্লামা শাহ সালাহউদ্দিন নানুপুরীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এতেকাফে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা নিরবচ্ছিন্ন ইবাদত, জিকির-আজকার ও দীনি তালিমে মগ্ন থাকেন।
এতেকাফে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিরা জানান, এখানকার পরিবেশ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও আত্মার প্রশান্তির আধার।
চকরিয়া থেকে আসা আবুল মুহাম্মদ বলেন, "নানুপুরে এতেকাফ করলে অন্তরে এক অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভূত হয়। "নোয়াখালী থেকে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, "এতেকাফের জন্য নানুপুরের মতো সুন্দর পরিবেশ ও দীনি শিক্ষার সুযোগ আর কোথাও পাওয়া যায় না।"
মাদরাসার পীর ও মহাপরিচালক আল্লামা শাহ সালাহউদ্দিন নানুপুরী বলেন, "প্রতি বছর জামিয়ার মুহিব্বীনদের অসংখ্য মুসল্লি এখানে আসেন। বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের নেহরানিতে থেকে তারা আত্মশুদ্ধি ও আমলের উৎকর্ষ সাধনে নিয়োজিত থাকেন। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে তাদের জন্য পরিবেশ সহজ করার চেষ্টা করি।"
রমজানের শেষ দশকে নানুপুর মাদরাসায় আধ্যাত্মিকতার এক মহাসমাবেশ ঘটে, যেখানে তিন থেকে চার হাজার মুসল্লি সমবেত হন। মসজিদের প্রতিটি কোণ জিকির-আজকারে মুখরিত হয়ে ওঠে, আর দীনি তালিম-তরবিয়তের এক নিবিড় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নিরবচ্ছিন্ন ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত ও আত্মশুদ্ধির প্রয়াসে মগ্ন এসব মুসল্লিদের জন্য থাকা-খানা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সুব্যবস্থা রাখা হয়। পুরো মাদরাসা এলাকা এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে পরিণত হয়, যা ইবাদতপ্রেমীদের জন্য আত্মশুদ্ধির এক অনন্য সুযোগ এনে দেয়।
নানুপুর মাদরাসার চল্লিশ দিনের এতেকাফ আজ শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য এক অনন্য আধ্যাত্মিক প্রশান্তির তীর্থস্থান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :