মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার মহেশপুর গ্রামের মালেশিয়া প্রবাসী রইচ উদ্দিন মৃধার স্ত্রী নাজমা বেগমকে জমি-জমা সংক্রান্ত জের ধরে লোহার শাবল দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বক আহত করে প্রতিপক্ষ দেবর সেনাসদস্য আখির মৃধা ও ভাসুর ফিরোজ মৃধা। আহত আশংকাজনক অবস্থায় তাৎক্ষনিক নাজমা বেগমকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এখানে তার অবস্থার আরোও অবনতি ঘটলে পরবর্তিতে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ তিনমাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহনের পর তিনি সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে আসেন।
এঘটনায় নাজমা বেগম বাদী হয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি-২০২৪ শ্রীপুর থানায় আখির মৃধা ও ফিরোজ মৃধাকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা করায় আখির মৃধা ও ফিরোজ মৃধা বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং মামলা তুলে নিতে বাদী নাজমা বেগমকে কঠিনভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এমন কি মামলা তুলে না নিলে জীবননাশের হুমকিও প্রদর্শন করে। মামলা তুলে না নেওয়ায় একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ অখির মৃধা ক্ষীপ্ত হয়ে তার লোকজন দিয়ে নাজমা বেগমের নামে আদালতে মাদকসহ তিনটি মামলা দেয়। এমনকি নাজমা বেগমের ৮ বছরের শিশুকন্যাকেও মারধর করা হয় আবার শিশুটিকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। আসামী আখির মৃধা এলাকার প্রভাবশালী ও দাঙ্গাবাজ হওয়ায় তাদের ভয়ে মামলার বাদি নাজমা বেগম ও তার শিশুকন্যা বৃষ্টি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং জীবন ভয়ে অধিকাংশ সময় তারা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রবাসী রইচ মৃধার স্ত্রী, মামলার বাদী নাজমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীর শরিকানা সম্পত্তি দেবর সেনাসদস্য আখির মৃধা ও ভাসুর ফিরোজ মৃধা জোর করে জবর-দখল নিয়ে ফসলে ও মেহগিনি বাগানে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্বামী বাড়িতে না থাকার কারণে তার দেবর আখির মৃধা বিভিন্ন সময়ে তাকে কু-প্রস্তাব দিতো। এতে সে রাজী না হওয়ায় আখির মৃধা ক্ষীপ্ত হয়ে তার স্বামীর মেহগিনি বাগানে যখন আগুন ধরিয়ে দেয় তখন তার ৮ বছরের শিশুকন্যা বৃষ্টি খাতুন আগুন লাগানোর বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। মেয়েটি ঘটনাস্থলে পৌছামাত্রই আখিল মৃধা তাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে । শিশুটির মারপিটের চিৎকার শুনে তার মা নাজমা বেগম কন্যাকে বাঁচাতে ওদের কাছে যাওয়ামাত্রই নাজমা বেগমের ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে দেবর, সেনাসদস্য আখির মৃধা ও তার বড়ভাই ফিরোজ মৃধা লোহার শাবল দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বক আহত করে। এখানেই ক্ষ্যান্ত হয়নি আখির ও ফিরোজ মৃধা। নাজমা বেগমের ৮ বছরের শিশুকন্যার নামে থানায় দেওয়া হয় মামলা। নাজমা বেগমের নামে কোর্টে দেওয়া হয় মাদক মামলা।
এরপরও নাজমা ও তার শিশুকন্যা বৃষ্টিকে অব্যাহতভাবে দেওয়া হচ্ছে জীবননাশের হুমকি। এসব ভয়ভীতির কারণে শিশুকন্যা বৃষ্টির স্কুলে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। স্বামী প্রবাসে থাকায় বাড়িতে একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে বসবাস করা নাজমা খাতুনের পক্ষে চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। নাজমা খাতুনের দায়ের করা মামলায় আখির মৃধা আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্তে¡ও আখির মৃধা ছুটিতে এসে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় কিন্ত পুলিশ তাকে ধরছে না। আখির মৃধার হুমকি ধামকি, মামলা তুলে নেওয়ার ভয়ভীতি,নতুন করে মিথ্যা মামলার ভয়-ভীতির কারণে নাজমা খাতুনের পরিবারটি চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
এবিষয়ে প্রবাসী রইচ মৃধা ভিডিও কলে বলেন, তার ছোটভাই আখির ও বড়ভাই ফিরোজ তার পরিবারের প্রতি ভীষণভাবে অত্যাচার করছে। তাদের অত্যাচারে স্ত্রী ও শিশুকন্যা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কন্যাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আছিয়ার মতো পূনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে তার পরিবারে। এমতাবস্থায় তিনি প্রশাসনের কাছে তার পরিবারের নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিতকরণসহ ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জোর দাবি করেছেন ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :