দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় গাজীপুরের কালীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ন্যাশনাল জুট মিলের ভিতরে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ব্রাশ ফায়ারে শহীদ করে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কালীগঞ্জে শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে শহীদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন ঊমি, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলাউদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল হক, উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা তাসলিম, সমাজসেবা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম, যুব উন্নয়ন বর্মকর্তা ইসমাইল ভ‚ইয়া, মাাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুর-ই-জান্নাত, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উম্মে রোমান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি হুমায়ুন কবির মাষ্টার, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর প্রধানগণ, ইউপি চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকবৃন্দসহ প্রমুখ। পরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলার খলাপাড়া এলাকার স্থানীয়রা জানায়, ১৯৭১ সালে ডিসেম্বরের ১ তারিখে উপজেলার খলাপাড়াস্থিত ন্যাশনাল জুট মিলের ভিতরে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করছিল। সকালবেলা পাক হানাদার বাহিনী শীতলক্ষা নদী পাড় হয়ে মিলের ভিতর প্রবেশ করে। হানাদার বাহিনী সন্ধা পর্যন্ত ন্যাশনাল জুট মিলে ভিতরে নির্মম গণহত্যা চালায়। ৩/৪ দিন পর্যন্ত মৃতদেহ মিলের ভিতরের বাগানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হানাদার বাহিনীর ভয়ে কেউ মৃতদেহ উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। দেশ স্বাধীন হলে এলাকাবাসী মিলের ভিতরে ১০৬ জনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে মৃতদেহগুলি ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে গণকবরে সমাহিত করা হয়।
পরবর্তীতে মিল কর্তৃপক্ষ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’ নামক একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে এবং শহীদের গণকবরের পাশে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :