আড়াইমাস আগে বাবা-মায়ের উপর অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন তোফাজ্জেল হোসেন তোফান (১৪) নামের এক কিশোর। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামের বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা নিকটতম আত্নীয়দের বাড়িতে ছেলের খোঁজ করেন। কিন্তু তাঁরা ছেলেকে পাননি। ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় ছেলের পিতা বাদি হয়ে গত জানুয়ারি মাসে আলমডাঙ্গা থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডাইরি করেন।
নিখোঁজের এক মাস পর একটি কিশোরের গাইবান্ধা থেকে ট্রেনেকাটা মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। তোফানের পরিবার জানতে পেরে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের ছেলেকে চিহ্নিত করে এবং লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন কার্য সম্পন্ন করেন।
দাফনের দেড় মাস পর সুস্থ শরীরে ওই কিশোর তোফান ঈদে তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসলে এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তোফান (১৪) আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদি ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর গ্রামের দিনমজুর আবু সাঈদের ছেলে।
তোফানের বাবা আবু সাঈদ জানান, তাঁরা প্রথমে এই ভেবে সান্তনা খুঁজে নিচ্ছিলেন যে ছেলে মারা গেলেও লাশটাতো অন্তত পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা জানতেন না, ছেলে তোফান বেঁচে রয়েছে। ছেলে ফিরে আসায় তাঁরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন।
তোফানের মা আনন্দ অশ্রু চোখে বলেন, ছেলের মুখে আবার মা ডাক শুনছি। ছেলেকে পেলাম, আমি কখন ভাবতে পারিনি আমার সোনামানিক আমার বুকে ফিরে আসবে। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া, আমার ছেলেরে আবারো আমার বুকে ফিরিয়ে দিয়েছে।
ফিরে আসা কিশোর তোফানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের উপর অভিমান করে আড়াইমাস আগে বাড়ি ছেড়ে আলমডাঙ্গার এক বন্ধুর সাথে রাজধানী ঢাকায় চলে যায়। ঢাকার শ্যামলীতে একটি লোহার দোকানে কাজ করি। সেখানেই থাকতে হত। সামনে ঈদ আসায় ছুটিতে বাড়িতে চলে আসি। তিনি আরো বলেন, আমি যে মারা গেছি সেটি আমি জানিইনা।
এ-বিষয়ে স্থানীয়রা বলছে, তোফান যদি জিবীত থাকে তাহলে দাফন করা হয়েছে ওই তরুণের পরিচয় কি? এনিয়ে নানা প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, সকালে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর জানতে পেরেছি দাফনের দেড় মাস পর নিখোঁজ কিশোর বাড়িতে ফিরে এসেছে। এ বিষয় গাইবান্ধা থানা পুলিশকে অবগত করা হবে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় নিখোঁজের বিষয়ে মেসেজ দেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :