প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুসের ছবি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো একটি বেনামী ফেসবুক একাউন্টের ব্যবহারকারী এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকালে পৌর শহরের পাবলিক মাঠ সংলগ্ন পূর্ব পাশের একটি বাসা থেকে সানজানা খান সীঁথি (২৪) নামের এক নারীকে আটক করে বাউফল থানা পুলিশ।
আজ শনিবার (২৯মার্চ) দুপুর ২টায় তাকে একটি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পটুয়াখালী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে৷
থানা থেকে ওই নারীকে আদালতে প্রেরণ করার সময় পঁচা ডিম নিক্ষেপ করেছে শিক্ষার্থীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নামে বেনামে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি খুলে মূলধারার সাংবাদিক, স্থানীয় রাজনীতিবীদ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও ছবি দিয়ে গুজব রটানো হচ্ছিলো। যার ফলে একধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয় পুরো উপজেলা জুড়ে।
এ বিষয়ে বাউফল থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিলো। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুজব রটানো ফেইক একাউন্ট ``বাংলাদেশের রাজনীতি`` থেকে শুক্রবার দুপুর পৌনে একটার দিকে লাইভ করা হয়। লাইভ প্রচারের পরে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই নারীকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে তার মুঠোফোন তল্লাশি করে গুজবের সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও ওই নারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে বিরোধী দলীয় নেতাদের ওপরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় পর্যায় ফেসবুকে ভুক্তভোগী হয়েছেন, বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার বাউফল প্রতিনিধি, সাধারণ সম্পাদক মানবকন্ঠ ও চ্যানেল এস`র মো. জসিম উদ্দিন, বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খবরের কাগজ ও ৭১ টিভি`র মশিউর রহমান মিলন, যমুনা টেলিভিশনের রইসুল ইসলাম ইমন, প্রথম আলো`র এবিএম মিজানুর রহমান, সমকাল`র জিতেন্দ্র রায়সহ একাধিক শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সরকারি অফিসার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ওই নারীর ব্যবহৃত ভুয়া ফেসবুক একাউন্টে দেখা গেছে তার গুজবের কারণে স্থানীয় এক নারী কাউন্সিলর ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তা প্রকাশ্যে চলাফেরা ক্ষেত্রে নিরাপত্তা শঙ্কা দেখে দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ সকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর ঘটনার মূলহোতা তার দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেছে স্থানীয় সাংবাদিকেরা।
গুজব রটানোর ঘটনায় মামলা না করে ভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানোয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া সংবাদকর্মী মুনতাসির তাসরিপ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, থানার পুলিশ আওয়ামী পুনর্বাসনে ব্যস্ত। থানার পুলিশের ওপরে আমরা আসলে হতাশ না। শুধু প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়টি, কোনো বিষয়ই আমরা বিচার চেয়ে সঠিক বিচার পাইনি। আমরা দাবি জানালেও কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এখন আর আশা করি না কিছুই। শুনতে খারাপ লাগলেও আমরা বলতে আজ বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, একটি পলিটিক্যাল মামলায় তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ফেসবুক একাউন্টের বিষয় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সরাসরি কিছুই স্বীকার করেনি, তবে তার জড়ির থাকার প্রমাণ পেয়েছি৷ পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগে এই বিষয়ে যোগাযোগ করেছি তবে এখনো কোনো সহযোগিতা পাইনি।
একুশে সংবাদ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :