ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় সরোয়ার মুন্সি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে, প্রতিপক্ষরা সরিষা চুরি করে বাঁদিকে ফাঁসাতে গিয়ে আসামি নিজেরাই ফেঁসে গেলেন, পুলিশ রহস্য উদঘাটন করে প্রধান আসামিকে শুক্রবার(২৮ মার্চ) রাতে গ্রেপ্তার করেছেন।
এমন ঘটনাটি ঘটে ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হিরালদী গ্রামে।
জানা যায় সরিষা চুরির বিষয়টি কোনভাবেই বিশ্বাস করাতে পারেননি বাদি মোশাররফ, দুই সপ্তাহ থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন অগ্রগতি পাননি, উপায়ান্ত না পেয়ে ভুক্তভোগী মোশাররফ আল্লাহর উপর ভরসা রেখে নিজে নিজেই সিসি ক্যামেরার দ্বারে দ্বারে দারস্ত হন, অবশেষে এক সপ্তাহ পর স্বস্তির নিঃশ্বাস হিসাবে ট্রাক ও ড্রাইভারের সন্ধান পান, তাতেও প্রশাসনের সন্দেহ কাটেনি, একে একে সিসি ক্যামেরার তিন থেকে চারটি ফুটেজের সন্ধান পেয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন প্রমাণাদি, তখন নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এমন ভাবে আবেগ আপ্লুত হয়ে ঘটনাটি জানান ভুক্তভোগী মোশাররফ।
তখন ঘটনার ১৬দিন পরে ফুটেজের একজন চিহ্নিত হয় শাকিল দাই(৩০)নামের এক যুবকের, এসময় শাকিলকে আসামি করে ঘটনার ১৬ দিন পর থানায় ১৯ মার্চ মামলা নেন, মামলা নং-২৫, মামলার ১০ দিন পর শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে আসামি শাকিলকে গ্রেফতার করেন পুলিশ,শাকিল হিরালদি গ্রামের শাজাহান দাইয়ের ছেলে।
মামলার সূত্রে জানা যায়,মোশারফ হাওলাদার তিনি সিজনাল ভুসি মালের ব্যবসা করেন, বাড়ির সাথেই গুদামঘর, প্রতিদিনের মতো ঐদিন ৩ মার্চ রাতে গুদাম তালাবদ্ধ করে রাখে, পরদিন সকালে তালা ভেঙ্গে তার ৪০ বস্তা সরিষা ১০ বস্তা কালো তিল ও দুই বস্তা গম চোরেরা নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ২ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা।
মালিগ্রাম বাজার ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একটি ড্রাম ট্রাক রাত ২.৩১ মিনিটে খালি অবস্থায় আসে এবং মাল ভর্তি করে আজিমনগর মোড়ার দিকে চলে যায়, ওইখানের আরেকটি সিসি ক্যামেরায় আজিমনগর বাজারের রোড দিয়ে খালি অবস্থায় ফেরত যায়। আসামি শাকিল দাইদের সঙ্গে বাদীর বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে পূর্ব শত্রুতা চলতে থাকে। সেই জের হিসেবে এক কান্ড ঘটায়।
এ ঘটনায়, মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এআই) রতন কুমার মন্ডল জানান, শাকিল সরিষা নেয়ার ঘটনাটি স্বীকার করেছে এবং তার সঙ্গে আরো সাত থেকে আট জন রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে নাম উল্লেখ করা যাচ্ছে না।
এদিকে ট্রাক ড্রাইভার আকিদুল জানান, শাকিল আর আমি একসঙ্গে ড্রাইভিং করতাম সেই সূত্রে তার কিছু মালামাল অন্যত্র নেওয়ার কথা বলে তাকে ভাড়া করে, যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি ৮ থেকে ১০ জন তখন আমি ভয় পাই, আমি বহন করতে অপারগতা কথা বললে আমাকে গলায় চাকু ঠেকিয়ে ধরে শাকিল, পরে বাধ্য হয়ে আজিমনগরে গিয়ে মাল নামাই দিয়ে আসি আমাকে ভাড়া পর্যন্ত দেয় নাই ।
বাদি মোশারফ আরো জানান, আমাদের এলাকায় দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষে সরোয়ার মুন্সি নামে একজন কে হত্যা করে আমাদের প্রতিপক্ষরা, সেই জেরে আমার সরিষা হারানোকে নাটক সাজানো বলে অপবাদ দেয়, অবশেষে আল্লাহ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে সকল কুলু উদঘাটন করতে পেরেছেন পুলিশ, এজন্য শুকরিয়া জানাই।
একুশে সংবাদ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :