রামের জন্মতিথি উপলক্ষে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঠাকুরমান্দা রঘুনাথ জিউ মন্দিরে ঢল নেমেছে হাজারো রামভক্তের। রোববার ভোরে পূজা-অর্চনার পর মন্দিরের দ্বার ভক্ত-দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। উৎসবকে ঘিরে মন্দিরসংলগ্ন ঠাকুরমান্দা বাজারে বসেছে জমজমাট গ্রামীণ মেলা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান ঠাকুরমান্দার রঘুনাথ জিউ মন্দির। রামনবমী উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে পদাবলী কীর্তন, ভোগ নিবেদন, প্রসাদ বিতরণ ও ভক্তদের ভজন-সঙ্গীতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। হাজারো রামভক্তের আগমনে পরিণত হয় এক বিশাল মিলনমেলায়।
এদিন দুপুরে রামনবমীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. শাহজাহান পিপিএম, নওগাঁর পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার, মান্দা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জাকিরুল ইসলাম এবং মান্দা থানার ওসি মনসুর রহমানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
অপরদিকে, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য এম.এ. মতিন, মান্দা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান মকে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপুসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মন্দির পরিদর্শন করেন।
স্থানীয়রা জানান, একসময় মন্দির সংলগ্ন শিবনদ দিয়ে ভক্তরা স্নান করে পদ্মপাতা মাথায় নিয়ে ঠাকুর দর্শনে আসতেন। যদিও এখন নদীর জৌলুস ম্লান, পদ্মপাতাও বিলুপ্ত প্রায়, তবুও সেই প্রথা আজও অনুসরণ করেন অনেক ভক্ত। আশপাশের পুকুরে স্নান সেরে ভক্তরা মাটির পাতিলে ভোগের মিষ্টান্ন মাথায় নিয়ে ঠাকুরের চরণে নিবেদন করেন।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ছত্রাপুর গ্রামের হাসি রানী কবিরাজ প্রতিবন্ধী ছেলের সুস্থতার জন্য মানত করতে এসেছেন রঘুনাথ জিউ মন্দিরে। তার ৭ বছর বয়সী ছেলে তন্ময় শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় চলাফেরা করতে পারে না।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিক জানান, ভোরে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। দুপুরে অন্নভোগ, দিনভর কীর্তন ও ভজন-সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়েছে।
কমিটির সহ-সভাপতি মনোজিৎ কুমার সরকার বলেন, রামনবমী উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি মন্দির কমিটির দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
এবারের ৯ দিনব্যাপী ধর্মীয় এ উৎসবের পরিসমাপ্তি হবে আগামী ১৪ এপ্রিল ‘লক্ষণ ভোজের’ মধ্য দিয়ে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :