শেরপুর আদালতে একটি ১০৭/১১৭ মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আসামী মো. আব্দুল মোতালেব কর্তৃক বাদী মো. আইন উদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রমূলক ও মানহানিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী বাদী। উক্ত মামলাটি ভিন্ন খাতে নিতে বাদীকে সম্মানহানি করতে বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ দায়েরও করেছেন বিবাদী। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধিগাঁও গ্রামে।
থানায় দায়ের করা বাদীর অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গান্ধিগাঁও গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে মো. আব্দুল মোতালেব তার পারিবারিক অর্থের প্রয়োজন থাকায় ২০১৭ সালের ১৬ডিসেম্বর গান্ধিগাঁও মৌজার সাবেক দাগ-১৭৫৯/৪৩৭২, হালদাগ- ৪৩৭৩,৭৩৭৫ থেকে একি গ্রামের মৃত শাহনেওয়াজের ছেলে মো. হাবিবুর রহমানের কাছে ৪০ শতাংশ জমি সাব কওলা দলিলমূলে বিক্রি করে। পরবর্তীতে উক্ত ৪০শতাংশ জমি হাবিবুর রহমান ২০১৮ সালের ৭অক্টোবর একি গ্রামের মৃত আব্দুল ছামাদের ছেলে মো. আইন উদ্দিন শিকদারের নিকট বিক্রি করে। আইন উদ্দিন শিকদার ব্যবসায়িক কারণে ঢাকায় অবস্থান করায় ক্রয়কৃত ৪০ শতক জমি একি গ্রামের মৃত রফিজলের ছেলে আব্দুল আজিজকে বর্গা চাষ করতে দেন। এরপর আব্দুল আজিজ ওই জমি বর্গা চাষ করে। পরে ২০২৫সালের জানুয়ারিতে উক্ত জমি আব্দুল আজিজ আর বর্গা চাষ করবেনা মর্মে আইন উদ্দিন শিকদারকে জানিয়ে দেয়। ফলে ওই ৪০ শতক জমি পতিত না রেখে আইন উদ্দিন শিকদার তার ছোট ভাই উসমান আলীকে চাষাবাদ করতে বলে। বড় ভায়ের কথামতে উসমান আলী উক্ত জমিতে চলতি বছরের ৭ফেব্রুয়ারি সকালে বোর ধান চাষের উদ্যোগ নেয়া সহ ক্ষেতে পানি সরবারাহের জন্য ড্রেন খননের কাজ শুরু করে। এসময় ওই জমির সাবেক মালিক আব্দুল মোতালেব ও তার লোকজন নিয়ে ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে ড্রেন খননের বাঁধা সৃষ্টি করা সহ উক্ত ড্রেন ভেঙ্গে দেন। শুধু তাই নয়, ওই জমিতে কাজ না করার জন্য নানা ধরণের হুমকিও দেন আব্দুল মোতালেব। বিষয়টি উসমান তার বড় ভাই আইন উদ্দিন শিকদারকে জানায়।
এতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা থাকায় আইন উদ্দিন শিকদার ঝিনাইগাতী থানায় আব্দুল মোতালেবের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ অভিযোগটি আমলে নিয়ে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ঝিনাইগাতী থানার নন এফ.আই.আর.নং-৬, তারিখ- ২৮-০২-২০২৫, ফৌজদারি কার্যবিধি ১০৭/১১৭(সি) ননজিআর নং-৬৭/২৫দাখিল করেন। যাহা চলতি মাসের ৮এপ্রিল সকাল ৯ঘটিকায় বাদী ও বিবাদীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে নোটিশ প্রদান করেন। এতে আব্দুল মোতালেব আরো বেশী ক্ষিপ্ত হয়ে আইন উদ্দিন শিকদারের মান সম্মান নষ্ট করতে উপজেলা বিএনপি সহ বিভিন্ন স্থানে মনগড়া ও কাল্পনিক অভিযোগ দায়ের করে।
আব্দুল মোতালেব এর আনিত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে গেলে গান্ধিগাঁও গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে শাহজাহান, মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে আবু হানিফ, মৃত রহিজ উদ্দিনের ছেলে আয়েত আলী, মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রহমাত আলী, মৃত ছমির উদ্দিনের ছেলে ইয়াদ আলী সহ আরো অনেকে আব্দুল মোতালেবের আনিত অভিযোগটি সম্পুর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে জানান, আইন উদ্দিন শিকদার আমাদের গ্রামের অহংকার। তিনি সারা বছর ঢাকায় বসবাস করলেও প্রতিটি কোরবাণী ঈদে দেড় দুই লাখ টাকা খরচ করে গরু কিনে কোরবাণী দিয়ে গ্রামবাসীদের মাঝে বিতরণ করে। এই গ্রামের অনেক গরীব অসহায়কে তিনি অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করে আসছেন। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীদের সামর্থ না থাকায় প্রায় ১০/১২ লাখ টাকা খরচ করে জমি কিনে গ্রামবাসীদের নামে কবরস্থান নির্মাণ করে দিচ্ছেন। যাহার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। গ্রামবাসীরা আরো জানান, আইন উদ্দিন শিকদারের মতো একজন সমাজসেবক আমাদের সমাজে পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
আইন উদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, আমি টাকা দিয়ে আব্দুল মোতালেবের বিক্রয় করা জমি আমি আরেক দাতার কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। এটা কি আমার অপরাধ? এছাড়া আমি গ্রামবাসীদের আমার সামর্থনুযায়ী সাহায্য সহযোগিতা করি। এটাও কি আমার অপরাধ? মূলত আব্দুল মোতালেব আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে আমার নামে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যাহা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
এই বিষয়ে আব্দুল মোতালেবের সাথে যোগাযোগ করেও তাহার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জমির মোকদ্দমা থেকে নিজেকে বাঁচাতে আব্দুল মোতালেব বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। যাহা আদৌ সঠিক নয়। আদালতে হাজির হলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে এমনটাই বলছেন গ্রামবাসীরা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :