ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডে একের পর এক বর্বর হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে পালিত হয়েছে ‘নো-ওয়ার্ক, নো-স্কুল’ কর্মসূচি।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই মৌলভীবাজার শহরসহ জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, রাজনগর, বড়লেখা এবং অন্যান্য উপজেলা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে উত্তাল ছিল।
জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। এতে সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, একাধিক রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন, গণসংগঠন ও ব্যবসায়ী সংগঠনে নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
বেলা ২টায় জেলার শ্রীমঙ্গল শহরে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে মুসল্লিরা ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন’, ‘বয়কট বয়কট, ইসরায়েল বয়কট’; ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, ‘ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে,’ ‘নতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ‘ইসলামের শত্রæরা/ইসরায়েলের বন্ধুরা হুঁশিয়ার সাবধান’; ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিলটি চৌমুহনা থেকে শুরু করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চৌমুহনায় এসে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। মিছিল শেষে চৌমুহনা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ ও ঘন্টাব্যাপী ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ও ধর্মপ্রাণ তাওহিদি জনতা। এসময় নানান প্ল্যাকার্ডে ইসরায়েলি বর্বরতার বিপক্ষে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
এদিকে মৌলভীবাজার শহরের প্রেসক্লাব চত্বরের সামনে বেলা ৩টায় সর্বস্তরের ছাত্রজনতার ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও শহরের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এছাড়া শহরে মৌলভীবাজার উলামা মাশায়েখসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারেও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের সমাবশে বক্তব্য দেন ছাত্র মজলিসের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সদস্য মাহমুদুল হাসান নাইম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের শ্রীমঙ্গল উপজেলা সভাপতি সাদিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের মৌলভীবাজার জেলার প্রশিক্ষণ সম্পাদক মোঃ মোজাহিদল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস শ্রীমঙ্গল উপজেলা সভাপতি মোঃ আব্দুল কাইয়ূম, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সর্বস্তরেরর ছাত্র জনতার পক্ষে হাফিজুর রহমান চৌধুরী তুহিন, মুফতি শেখ শিব্বির আহমদ, খালেদ আহমদ, মাওলানা সোহাইল আহমদ, এম রহিম নোমানী, মাওলানা আয়েত আলী প্রমুখ।
সমােেশ বক্তারা বলেন, ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের উচিত প্রতিবাদে শামিল হওয়া। আমেরিকার মতো যেসব দেশ এমন গণহত্যা দেখে নিশ্চুপ তাদেরও বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলো কাপুরুষতার পরিচয় দিচ্ছে, যার জন্যই সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। অনতিবিলম্বে মুসলিম দেশগুলোকে এককাতারে এসে এই গণহত্যার প্রতিবাদ করার আহান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহবান জানান তারা।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা জাতিসংঘ, বিশ্বের মানবতাকামী সংগঠনের প্রতি আহবান জানাই, অচিরেই ইসরায়েলকে বয়কট করুন। পাশাপাশি ইসরায়েলের সকল পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কটের দাবি জানান তারা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :