দ্বীপজেলা ভোলার শহর রক্ষা বাঁধ গ্রীষ্মের শুরুতেই চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মেঘনা নদীর তীরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন, যার সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র ধরা পড়েছে শিবপুর মাছঘাটসংলগ্ন প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায়। ভাঙন থামাতে না পারলে মাত্র ৬০ মিটার দূরেই শহর রক্ষা বাঁধটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আসন্ন বর্ষায় ভোলার জেলা শহরসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ জনপদ ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
ভোলা শহরের বাসিন্দা মুবারক হোসেন, মো. আলম ও নীরবসহ অনেকে জানান, শুধু শিবপুর নয়, সদর উপজেলার ধনিয়া থেকে দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের দাবি, শুধুমাত্র জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয়—নদীতীর সংরক্ষণে টেকসই ব্লকবাঁধ ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প জরুরি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত সময়ে মানববন্ধন ও কর্মসূচি পালন করেও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গেল বর্ষায় শিবপুর মাছঘাট এলাকায় মেঘনার ভাঙনে ফসলি জমি ও খামারসহ প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে সেই ভাঙন আরও তীব্র হয়েছে। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে জেলা শহর থেকে মাত্র আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে থাকা শিবপুর থেকে ভাঙন সরাসরি শহর এলাকায় হানার আশঙ্কা রয়েছে।
শিবপুর ঘাটের বাসিন্দা নুর হোসেন জানান, “এখনই পদক্ষেপ না নিলে জেলা শহরের নিরাপত্তাও থাকবে না। ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষি ও যোগাযোগব্যবস্থা।”
ঘাটের আড়ত মালিক আরিফ হোসেন বলেন, “ঘাটে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সরিয়ে নেওয়ার জায়গা পাচ্ছি না। বাঁধ ধ্বংস হলে সবকিছু নদীতে চলে যাবে।”
পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউদ্দিন আরিফ জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ২০০ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ফেলার জন্য ৮০ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। পাশাপাশি চার কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ ও ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে ৬২৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :