যশোরের চৌগাছায় জবাই করে রিক্তা খাতুন (৪০) নামে এক নারীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ঢেঁকিপোতা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত রিক্তা খাতুন ছিলেন গ্রামের রোকনুজ্জামান রোকনের দ্বিতীয় স্ত্রী। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পারিবারিক কলহ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, "আমরা মুটামুটি নিশ্চিত হয়েছি এটি পারিবারিক দ্বন্দ্বজনিত হত্যা। তদন্ত চলছে, দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।"
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নিহত রিক্তা খাতুন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। তার প্রথম স্বামী আজিজুর রহমান বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী। তিন সন্তান রেখে বছরখানেক আগে তিনি যশোরের চৌগাছার ঢেঁকিপোতা গ্রামের রোকনুজ্জামান রোকনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
রোকনুজ্জামান রোকনের প্রথম স্ত্রী বিলকিস খাতুন ও তার চার ছেলেসন্তান রয়েছে। দুই স্ত্রী নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করলেও পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকতো। এই কারণে রোকন দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য পাশের গ্রাম মস্মমপুরে আলাদা ঘর নির্মাণ করছিলেন। সেদিকে নিয়মিত যাতায়াত করতেন তারা।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয়রা রিক্তা খাতুনকে নিজ বাড়ির মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে জানান এলাকাবাসী।
ঘটনার সময় প্রথম স্ত্রী বিলকিস খাতুন মাংস কেনার জন্য বাজারে গিয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে—তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনের দ্বন্দ্ব ও সংশ্লিষ্টদের শনাক্তে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনাটি এলাকায় চরম উদ্বেগ এবং আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। একই বাড়িতে দুই স্ত্রী থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই কলহ চলছিল বলে স্থানীয়রা জানান। এই হত্যাকাণ্ড সেই দ্বন্দ্বেরই পরিণতি বলে তাদের ধারণা। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :