নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলায় গত দুই সপ্তাহে পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে তিনটি ঘটেছে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে, একটি আলু কেনাকে কেন্দ্র করে এবং অন্যটি ছুরিকাঘাতে। এসব ঘটনায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ বাড়ছে।
রবিবার (৩০ মার্চ) বিকালে লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা চৌরাস্তা এলাকায় নড়াইল জেলা বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন (৫০)–কে পিটিয়ে হত্যা করেন এক সবজি বিক্রেতা।
জানা যায়, মামুন আলু কেনাকে কেন্দ্র করে দোকানদার ইদ্রিস শেখের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ইদ্রিস শেখ প্লাস্টিকের গামলা দিয়ে মামুনের মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত মামুনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘাতক ইদ্রিস শেখ (৬০)-কে আটক করেছে। ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।
একই দিন সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার জামরিলডাঙ্গা গ্রামে লস্কর ও শেখ বাড়ির মধ্যে চলমান বিরোধের জেরে সংঘর্ষে নিহত হন তালেব শেখ (৬৫)। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন।
কালিয়া থানা পুলিশ জানায়, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।
ঈদের দিন বিকেলে লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আকবার শেখ (৬৫) নিহত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আকবার শেখকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫৭) নিহত হন। এতে আহত হন অন্তত ৩০ জন।
পুলিশ জানিয়েছে, আগের দিন আদালত থেকে ফেরার পথে মারধরের ঘটনা থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং সেনাবাহিনী ২০ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে।
শনিবার সকালে সদর উপজেলার নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় ছুরিকাঘাতে মোশারফ হোসেন মুসা (৪৫) নিহত হন। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে হত্যার কারণ জানা যায়নি; তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
অল্প সময়ের ব্যবধানে জেলার তিনটি উপজেলায় পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :