রমজান উপলক্ষে টানা ৪০ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিশু-কিশোরদের সামাজিকীকরণে ব্যাঘাত ঘটছে। এই সুযোগে প্রযুক্তি বিশেষত স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা। অনুকরণপ্রিয় শিশুরা যখন নিজ পরিবেশে সঠিক দিকনির্দেশনা পায় না, তখন তাদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
বর্তমানে স্মার্টফোন কিশোরদের জন্য এক নতুন ‘নেশা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদকের মতোই ভয়ংকর এই আসক্তি। অভিভাবকরাও এ আসক্তি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছেন। কেউ কেউ শিক্ষক বা অন্যের কাছে ফোন জমা রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে বিষয়টি উদ্বেগজনক।
আক্দুল আউয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “অনেক অভিভাবক সন্তানদের মোবাইল নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে আমার কাছে ফোন জমা রাখতে আসেন। শিশুরা আজ খেলাধুলা বাদ দিয়ে মোবাইলে সময় কাটায়। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে।”
স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে সৃষ্টি হচ্ছে হীনমন্যতা, হতাশা, আত্মকেন্দ্রিকতা, বিদ্রোহী মনোভাব, সাইবার বুলিং, এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও। ডা. মফিকুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, “এই আসক্তি শিশুদের আচরণগত সমস্যা এবং অপরাধপ্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।”
সাংবাদিক মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার শিশুদের লেখাপড়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পারিবারিক সহিংসতাও বাড়ছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এক্ষেত্রে সমন্বিত সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ প্রয়োজন।
অনলাইন গেম ও পর্নো সাইট নিষিদ্ধ করা
স্কুলে মোবাইল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ
শিশুদের সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখা
বাবা-মা ও শিক্ষকদের সচেতনতা বাড়ানো
মাঠে খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি
শিশুরা সহজে যা দেখে তা অনুকরণ করে। তাই বড়দেরই উচিত তাদের ইতিবাচক দৃষ্টান্ত দেখানো। শিশুর মন পবিত্র ও কোমল—এই মনকে যত্নে ও দায়িত্বে গড়ে তুলতে হবে, নয়তো একটি প্রজন্ম হারিয়ে যেতে পারে প্রযুক্তির ফাঁদে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :