কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে অনিয়মের অভিযোগে এবং ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা এবং শেষ পর্যন্ত হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মাজেদুল ইসলাম মিন্টুর সমর্থকরা উপজেলার মৌটুপী এলাকায় এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। এই আয়োজনের মাধ্যমে তারা আহ্বায়ক মিন্টুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং ১১ এপ্রিল করা মানববন্ধনের প্রতিবাদ জানান।
প্রতিবাদ সভা শেষে নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন এবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন—“স্বৈরাচারের দোসররা হুশিয়ার”, “স্বৈরচারের ঠিকানা বিএনপিতে হবে না”—এমনকি কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে ‘জুতা মারার’ মতো অপমানজনক স্লোগানও শোনা যায়।
এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার বেপারীর অনুসারী ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ মেম্বার ও যুবদল নেতা কবির হোসেনের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল মিছিলে বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শুরু হয় হট্টগোল ও হাতাহাতি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা ভিডিও ধারণ করতে গেলে আক্তার বেপারীর অনুসারীরা বাধা দেন এবং তাঁদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মাজেদুল ইসলাম মিন্টু বলেন, “কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা অনুযায়ী তিতাস উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করেছি এবং সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে কমিটি অনুমোদন দিয়েছি। আওয়ামী লীগের দোসরদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কমিটি প্রকাশের আগেই ইউনুস, মোশাররফ, শফিকুল, এমদাদ, শুক্কুর মেম্বার ও ইব্রাহিম মোল্লা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের প্রতিবাদ সভায় প্রতিপক্ষের লোকজন এসে হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আমি নিজে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি।”
অন্যদিকে, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ মেম্বার ও যুবদল নেতা কবির হোসেন বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আজ সকালে কার্যালয়ে বসে থাকা অবস্থায় মাজেদুল ইসলাম মিন্টুর সমর্থকরা এসে আমাদের উদ্দেশ্যে ‘স্বৈরাচার’ বলে স্লোগান দেয়। তখন আমরা জানতে চাই, তারা কাকে স্বৈরাচার বলছে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।”
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল বিকেলে মজিদপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ওয়ার্ড কমিটি গঠনে অনিয়ম ও ত্যাগীদের উপেক্ষার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছিলেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা, যাঁদের মধ্যে ইউনুস, মোশাররফ, শফিকুল ইসলাম, এনামুল হক এমদাদ, শুক্কুর মেম্বার ও ইব্রাহিম মোল্লা ছিলেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :