রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নে ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে চাঞ্চল্যকর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউপি সদস্য ঝর্ণার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি।
গত ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোজাহেদুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। সদস্য হিসেবে রয়েছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার খায়রুল ইসলাম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভূপাল চন্দ্র রায়। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগে জানান, উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বরাদ্দকৃত ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বিতরণের তালিকায় দুঃস্থ অসহায় পরিবারের নাম থাকা স্বত্বেও চাল পাননি। এতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ঝর্ণার বিরুদ্ধে চাল আত্মসাৎ ও স্লিপ গায়েব করার মতো গুরুতর অপরাধের শাস্তি দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) বরাবর ভুক্তভোগীদের গণস্বাক্ষর সম্বলিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পঙ্গু নাজমূল ইসলাম নামের একজন ভুক্তভোগী।
সরেজমিনে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। শুধু ভিজিএফ নয়, বরাদ্দকৃত রেশন কার্ড, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা, এমনকি ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ নিয়েও চলছে দালালি ও ঘুষ বাণিজ্য। ভুক্তভোগী পঙ্গু নাজমুল ইসলাম বলেন, “আমার নাম তালিকায় ছিল, কিন্তু কোনো স্লিপ পাইনি। পরে শুনি, আমার নামে চাল উঠেছে।” একই অভিযোগ করেন শাহাজুল ইসলাম, ছাবেরা বেগম, মমতাজ বেগমসহ আরও অনেকে।
অন্যদিকে বিধবা ভাতা নিয়েও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বিধবা রওশনারা বেগম জানান, “৪০ দিনের কাজ দেওয়ার আশ্বাসে ৪ হাজার টাকা এবং বিধবা ভাতার জন্য আরও ১ হাজার টাকা নিয়েছে ইউপি সদস্য ঝর্ণা, কিন্তু আমাকে কোন কিছুই দেয়া হয়নি ।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইউপি সদস্য ঝর্ণা বেগম বলেন, মোক বেইজ্জত করেন না ভাই ।এগুলা বিষয় নিয়া বাড়াবাড়ি করি মোক বিপদোত না ফেলান।
উল্লেখ্য, ঝর্ণা বেগমের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। ২০২২ ও ২০২৩ সালে অসংখ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। রেশন কার্ড ও ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। যার লিখিত প্রমাণ রয়েছে ইউএনও কার্যালয়ে। তবে অভিযোগকারীরা পরে ইউপি চেয়ারম্যানের চাপ ও মামলার ভয় দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হণ বলে অভিযোগ রয়েছে ।
এ বিষয়ে ইউএনও মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :