ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মানাধীন একটি পিলারের পিয়ারক্যাপের সাটার (নির্মাণ সামগ্রী) ভেঙ্গে পড়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে একটি কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দূর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ওই গাড়ির ওপরেই সাটারের একাংশ এবং বাকি অংশ ফুটওভার ব্রীজের ওপর পড়ে। এতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যদিও ফায়ার সার্ভিস বলছে গাড়ির ধাক্কায় এই দূর্ঘটনা ঘটেনি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে মহাসড়কটির আশুলিয়ার বলিভদ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হঠাৎ বিকট শব্দে ওপর থেকে সবকিছু ভেঙে পড়ে। পরে আশেপাশে থাকা মানুষ ছুটে যায়। পাইপগুলো সড়কের মাঝ বরাবর পড়েছে। এতে নবীনগরমুখী লেনে থাকা একটি কাভার্ড ভ্যানের ওপর একাংশ পড়ে। বাকি অংশ ফুটওভার ব্রিজের ওপর পড়ে।
দূর্ঘটনা কবলিত লরি বা কাভার্ড ভ্যানটি (চট্ট মেট্রো- ঢ ৮১-২০৭১) মহাসড়কের নবীনগর মুখী লেনে ছিল। আর ফুটওভার ব্রীজের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চন্দ্রামুখী লেনের পাশে। ঘটনার পর ফুটওভার ব্রীজেও মানুষের চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পথচারী কামাল বলেন, আমরা শব্দ শুনে দৌড়ে যাই। দেখি সব ভেঙ্গে পড়ছে। তখন এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। গাড়ির ড্রাইভার একটু আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থলের পাশের চা দোকানী বাদশাহ মিয়া বলেন, শব্দ শুনে সবাই দৌড়ে যায়। কোন মানুষের ওপর কিছু পড়েনি।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, একটি কাভার ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ফুটপাতে ধাক্কা লাগে। পরে বিমের পাইপে ধাক্কা লাগার পরে সাটারের একটা পার্ট খুলে কাভার্ড ভ্যানের ওপরে পরে। আমাদের ক্রেন আছে ওখানে। সব রেসকিউ করা হচ্ছে। এতে এই বিমের কিংবা রাস্তার অথবা কোন মানুষেরও কোন ক্ষতি হয়নি।
গাড়ির ধাক্কায় দূর্ঘটনার বিষয়টি কিভাবে নিশ্চিত হয়েছেন জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আমাদের লোক ওখানে আছে। তারা সার্বক্ষণিক থাকে, ২৪ ঘন্টা। তারা ট্রাফিক কন্ট্রোলও করে। তারা জানিয়েছে।
মূলত কি ঘটেছে সেখানে জানতে চাইলে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই পিলারের পিয়ার ক্যাপ ঈদের আগে ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাই করার আগে যে সাটারিং করা হয় সেটাকে ফর্মওয়ার্ক (FORMWORK) বলে। সেই ফর্মওয়ার্কগুলো একদিনে খোলা যায়না। পার্ট পার্ট করে জোড়া দিয়ে কাজ করতে হয়। আজকের মত কাজ করে শ্রমিকরা চলে গিয়েছে। এই অবস্থাতেই ছিল। সেখানেই কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা লাগে। এরপর দূর্ঘটনা ঘটে।
তবে গাড়ির ধাক্কায় এমন দূর্ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছে ফায়ার সার্ভিস। ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর আব্দুস সালাম বলেন, গাড়ি ধাক্কা দেয়ার মত কিছু আমরা বুঝতে পারিনি। ওখানে তো টিন দিয়ে ঘেরা আছে। সেখানে ধাক্কা লাগার কোন সুযোগই নেই। সেইটা তো পিলারে উপর আরেকটা পিলার। সেই পিলারটা মাঝখানে। সেখানে গাড়ি যাওয়ার সুযোগ নাই। ওটার দুই সাইডে টিন-সিকিউরড করা আছে। ব্যারিকেডের ভেতর পিলার। ধাক্কা লাগলে তো ব্যারিকেডটা আগে ভাংত। ব্যারিকেডটা অক্ষত আছে। আশেপাশের জনগণ বলেছেন লরিটা (কাভার্ড ভ্যান) রানিং ছিল। তবে গাড়িটির ড্রাইভার কিংবা হেলপার কাউকে আমরা পাইনি।
রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, আমরা যতটুকু জানি উপর থেকে ভেঙ্গে পড়েছে কিছু অংশ। কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে কিনা এখনই বলতে পারছিনা। এখন মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের টিমও সেখানে আছে। তাদের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারব।
একুশে সংবাদ//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :