নিজ কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অপরাধে বাবা আলতাপ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আলতাপ হোসেন (৪৬) সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের মৃত সাদেক আলী মৃধার ছেলে। তিনি ঘরজামাই হিসেবে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা হুদাপাড়া গ্রামে বসবাস করতেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর মা বোনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে ওই রাতে আলতাপ হোসেন মেয়েকে একা পেয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ২-৩ মাসে আরও ৭-৮ বার ধর্ষণ করেন।
২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কিশোরীকে পার্শ্ববর্তী গাংনী ইউনিয়নে বিয়ে দেওয়া হয়। স্বামীর বাড়িতে অবস্থানকালে অসুস্থতা অনুভব করলে প্রেগনেন্সি টেস্টের মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি প্রকাশ পায়। তখন মেয়েটি ঘটনার বিস্তারিত পরিবারকে জানায়।
২০২৪ সালের ৭ মার্চ ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০)-এর ৯(১) ধারায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত করেন আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাবর আলী এবং ১১ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আলতাপ হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন।
সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) এম এম শাহজাহান মুকুল বলেন, “মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির রায় আনতে পেরেছি। এই রায় সমাজে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যাতে এমন জঘন্য অপরাধ আর কেউ করতে না পারে।”
তিনি আরও জানান, “আদালত জরিমানার অর্থ দণ্ডিতের জীবদ্দশায় কিংবা মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি থেকে আদায়যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে—এ নির্দেশও রায়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :