AB Bank
  • ঢাকা
  • শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নড়াইলে কয়লা ভাটার ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য


Ekushey Sangbad
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল
১২:২৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
নড়াইলে কয়লা ভাটার ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

নড়াইলে অনুমোদনহীন কয়লার ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের গোয়ালবাথান, নাওরা ও বাধালসহ অন্তত ২৫টি ভাটায় প্রতিদিন হাজার হাজার মণ কাঠ পুড়িয়ে কয়লা উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে বনজ ও ফলজ গাছের ধ্বংস, কৃষিজমির ক্ষতি এবং স্থানীয়দের শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।

জানা গেছে, ইট ও মাটির তৈরি গোলাকৃতির চুল্লিতে কাঠ সাজিয়ে দিয়ে সপ্তাহব্যাপী আগুন জ্বালিয়ে তৈরি করা হয় কয়লা। প্রতিটি ভাটায় গড়ে সপ্তাহে ৩৫০ মণ কাঠ পুড়িয়ে ৪.৫ টন কয়লা তৈরি হয়। এভাবে মাসে প্রায় ৩৫ হাজার মণ কাঠ পুড়িয়ে উৎপাদিত ৫০০ টন কয়লা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

ভাটার ধোঁয়ার তীব্র গন্ধে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা। গোয়ালবাথান গ্রামের ফরিদা ইয়াসমীন লাকী বলেন, “এই ভাটার ধোঁয়ার গন্ধে আমি কোনো খাবার খেতে পারি না। দম বন্ধ হয়ে আসে, বমি আসে। গলা টানতে টানতে মরে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।”

নাওরা গ্রামের আবে খাতুন বলেন, “আমার দুই ছেলে ও নাতি ভাটায় কাজ করে, তাই কিছু বলতে পারি না। কিন্তু ধোঁয়ায় আমাদের শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”

স্থানীয়রা জানান, ধোঁয়ার কারণে অনেক শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বয়স্কদেরও ফুসফুসজনিত রোগ বেড়েছে। ফসলের উৎপাদন কমে গেছে।

নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় ম্যানেজ করে পুনরায় ভাটা চালুর অভিযোগও উঠেছে। বাধাল গ্রামের একটি ভাটা পূর্বে মোবাইল কোর্টে ভেঙে দেওয়া হলেও, মালিক শিবু খন্দকার পরে পুনরায় সেটি স্থাপন করেছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, “শিবু আমাদের বলেছে, যতবার ভাঙো, আমি আবার টাকা দিয়ে বানাবো। আমার ভাটা চলবেই।”

পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, “কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি সম্পূর্ণ অবৈধ। কোনো অনুমোদনের সুযোগ নেই। কিন্তু লোকবল, বাজেট ও প্রশাসনিক সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।”

নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মাদ আব্দুর রশিদ বলেন,“ফুসফুস ও মানসিক স্বাস্থ্যে ধোঁয়ার মারাত্মক প্রভাব পড়ে। প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ এসব সমস্যায় ভোগে। বায়ু দূষণের কারণে মানসিক সমস্যাও বাড়ছে।”
স্থানীয়দের দুর্ভোগ, বন ধ্বংস, কৃষি উৎপাদনে ধস ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি তদারকি ও শক্ত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় নড়াইলের পরিবেশ ও মানুষের জীবন আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে।

 

একুশে সংবাদ//এ.জে

Shwapno
Link copied!