মাদারীপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল থেকে আব্দুর রহমান নামে ৬ মাস বয়সী এক শিশু চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় শিশুটির মা সুমি আক্তার। শিশুটিকে ফিরে পেতে মায়ের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের ৬ তলার শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় সুমি আক্তার বড় মেয়ে জান্নাতকে খাওয়াচ্ছিলেন। সেই ফাঁকে এক গোলাপি বোরকাপরা নারী শিশু আব্দুর রহমানকে কোলে তুলে আদরের কথা বলে ওয়ার্ডের বারান্দায় নিয়ে যান। মুহূর্তের মধ্যেই ওই নারী শিশুকে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
হাসপাতালের বাইরে স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ওই নারী শিশুকে কোলে নিয়ে একটি ইজিবাইকে করে দ্রুত হাসপাতাল এলাকা ত্যাগ করছেন। তবে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড কিংবা ওয়ার্ডসংলগ্ন ফ্লোরে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায়, চুরির পূর্ণাঙ্গ দৃশ্য ধরা পড়েনি।
চুরি হওয়া শিশুর বাবা সুমন মুন্সি সদর উপজেলার মহিষেরচর পাকা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি জানান, “আমি কাজে ছিলাম। খবর পেয়েই ছুটে এসেছি। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমি বিচার চাই।”
শিশুটির মা সুমি আক্তার বলেন, “এক মুহূর্তের অসাবধানতায় আমার আদরের সন্তানকে হারালাম। বুঝতেই পারিনি যে এমন ঘটনা ঘটবে। আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই।”
এ ঘটনায় শিশুটির পরিবারের পাশাপাশি এলাকাবাসীও উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির অভিযোগও তুলেছেন তারা।
শিশুটির আত্মীয় সাইদুর রহমান খান বলেন, “হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিসিটিভি না থাকায় অপরাধীকে সহজে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। একটি এত বড় হাসপাতালে এমন নিরাপত্তাহীনতা সত্যিই দুঃখজনক।”
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চাতক চাকমা জানান, “সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এই চক্রে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে রাজি হননি। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল আমিনও এড়িয়ে যান সাংবাদিকদের প্রশ্ন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :