AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সীমানাবিহীন হাটে প্রভাবশালীদের খাজনা বাণিজ্যে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার


Ekushey Sangbad
আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই, জয়পুরহাট
০৪:৩১ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
সীমানাবিহীন হাটে প্রভাবশালীদের খাজনা বাণিজ্যে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার তালোড়া-বাইগুনী চারমাথা হাটটি গত ২৪ বছর ধরে প্রশাসনিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় সরকার হারিয়েছে কোটি টাকার রাজস্ব। অথচ হাট বসানোর জন্য ২০০১ সালে স্থানীয় এক দানবীর জমি দান করেছিলেন। সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় আজও এটি সরকারিভাবে ইজারাভুক্ত হয়নি। আর এই প্রশাসনিক ফাঁকে বছরের পর বছর ধরে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা অবৈধভাবে খাজনা আদায় করে আসছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০১ সালের ২২ জুলাই মৃত মজিবুর রহমান ২০ শতক জমি হাটের জন্য দান করেন (দলিল নং: ৪১২৭)। শুরু থেকেই প্রতি সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার হাট বসছে, পাশাপাশি দৈনন্দিন বাজারও চলছে পুরোদমে। কিন্তু হাটটি পুনট ও উদয়পুর দুই ইউনিয়নের সীমান্তে হওয়ায় প্রশাসন আজও এর সীমানা নির্ধারণে ব্যর্থ।

স্থানীয়রা জানান, ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত হাটটি বিএনপির দখলে ছিল। এরপর ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে। বর্তমানে বিএনপির নেতারাই আবার হাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিএনপির দুটি গ্রুপ—একটি ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেন ও আরাফাতের নেতৃত্বে এবং অপরটি সানাউল্যাহ, আব্দুল মতিন, নূর মোহাম্মদ, আলামিন, তাজউদ্দিন ও হেলালউদ্দিনের নেতৃত্বে—দুই ইউনিয়নের পৃথক অংশ থেকে খাজনা আদায় করছে। তারা জানান, খাজনা নির্ধারিত হারে আদায় করে মসজিদ-মাদ্রাসায় কিছু দান করলেও বাকি অর্থ ব্যক্তিগতভাবে ব্যয় করা হচ্ছে।

ধান ব্যবসায়ী মাসরেকুল রানা জানান, “শুধু ধান বিক্রি বাবদ এক মাসে ৭৫ হাজার টাকা খাজনা দিতে হয়েছে।” অন্য দোকানগুলো থেকেও প্রতিদিন নির্ধারিত হারে খাজনা নেওয়া হচ্ছে।

হাট এলাকার বাসিন্দা হবিবর রহমানের দাবি, প্রতি বছর ৮–১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়, যা পুরোটাই চলে যাচ্ছে কথিত ইজারাদারদের পকেটে। ফলে গত দুই দশকে সরকার প্রায় এক কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।

হাটের জমিদাতা মজিবুর রহমানের পুত্র মাহবুবুর রহমান বলেন, “প্রশাসন সব জানে, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয় না। আমরা জমি দান করেছি হাটের উন্নয়নের জন্য, অথচ সেই সুযোগে অন্যরা বছরের পর বছর পকেট ভরাচ্ছে।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুল জলিল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই হাট কবে মুক্ত হবে রাজনৈতিক দখলদারিত্ব থেকে? কবে নির্ধারিত হবে সীমানা, আর কবে পাবে সরকার তার ন্যায্য রাজস্ব?”

এ বিষয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান বলেন, “হাটটি দুই ইউনিয়নের সীমানায় হওয়ায় প্রশাসনিক জটিলতা রয়েছে। এটি কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি রাষ্ট্রের রাজস্ব আহরণের উৎস। খুব দ্রুত সীমানা নির্ধারণ করে সরকারি তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অবৈধভাবে খাজনা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Shwapno
Link copied!