বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনদিন ধরে নেই পানির সরবরাহ। ফলে টয়লেট, বাথরুমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে রোগী ও স্বজনদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। নদী ও পুকুর থেকে পানি এনে ব্যবহার করছেন তারা, আর খাবার পানি কিনে আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
জানা যায়, শনিবার (১৯ এপ্রিল) থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরনো দুটি মটর আগে থেকেই অচল ছিল, বাকি একটি সম্প্রতি বজ্রপাতের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। বিকল্প হিসেবে দু’টি ড্রামে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী পারুল বেগম, শিমা আক্তার, নাসিমা বেগম ও প্রতিবন্ধী সুমাইয়া জানান, "বাথরুম-টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য। দুর্গন্ধে টেকা যায় না। নিজেদের ব্যবহারের পানি আমরা নদী বা পুকুর থেকে বোতলে করে এনে ব্যবহার করছি।"
এদিকে, হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতিও নাজুক। ডাক্তার সংকট, অপারেশন থিয়েটার বন্ধ, দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মুজাহিদুল ইসলামের কক্ষ তালাবদ্ধ। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি নিয়মিত অফিস করেন না এবং সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন।
হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শাহারিয়ার ফাত্তাহ জানান, “ডা. মুজাহিদুল ইসলাম স্যারের ছেলে অসুস্থ থাকায় তিনি বাইরে রয়েছেন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, “হাসপাতালের সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মাহবুবুল আলম জানান, “ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে তাকে দ্রুত অফিসে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয়দের দাবি, জনবহুল একটি উপজেলার একমাত্র হাসপাতালের এমন অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবার মান পড়ে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে তারা মনে করেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :