AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
চুয়াডাঙ্গায় কৃষকরা নাবা ক্রপ কেয়ার

কোম্পানির ভুট্টা বীজ কিনে প্রতারণার শিকার, ফলনে বড়ো ধরণের বিপর্যয়



কোম্পানির ভুট্টা বীজ কিনে প্রতারণার শিকার, ফলনে বড়ো ধরণের বিপর্যয়

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার কোটালী গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক ভুট্টা চাষি নাবা ক্রপ কেয়ারের সরবরাহকৃত নাবা ৫৫ জাতের ভুট্টা আবাদ করে চরমভাবে প্রতারিত হয়েছেন। 

বীজ বিক্রির সময় কোম্পানির প্রতিনিধিরা বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মন ফলন হবার কাথা বলে বীজ বিক্রি করেছেন। এখন ভুট্টা কেটে চাষিরা বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ মন করে ফলন পাচ্ছেন। এতে চাষিরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বীজ কিনে প্রতারিত হওয়া চাষিরা কোম্পানির প্রতিনিধিদের খবর দিলেও তারা চাষিদের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করছেন না। বাধ্য হয়ে নাবা কোম্পানির ডিলার সেলিম উদ্দিন বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের কোটালী গ্রামের প্রায় দু‍‍` শতাধিক চাষি চলতি মৌসুমে নাবা ক্রপ কেয়ার কোম্পানির নাবা ৫৫ জাতের ভুট্টার বীজ বপন করেন। কোটালী গ্রামের চাষি জামাল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, আরশাদ আলী, রসুল করিম, মিন্টু মিয়া, ওবাইদুর, খাইরুল ইসলাম, ওমিদুল ও রবি মাস্টারসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, এ ভুট্টার বীজ কেনার সময় কোম্পানির লোকজন আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো বিঘাপ্রতি ভুট্টার ফলন হবে ৪০ থেকে ৪৫ মন। অধিক ফলন হবে এ প্রত্যাশায় নাবা ৫৫ জাতের ভুট্টারবীজ রোপণ করি। এখন ভুট্রা কাটতে গিয়ে দেখি মোচা হয়েছে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি করে। এক বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ মন করে ভুট্টা হচ্ছে। কৃষকদের দাবি পরাতন ও নিম্নমানের ভুট্টা বীজ তাদেরকে সরবরাহ করা হয়েছে।

ভুট্টা চাষি আকিমুল ইসলাম বলেন, সমিতি থেকে লোন নিয়ে দু‍‍` বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। এখন বিঘা প্রতি ১০ মন ভুট্টাও হচ্ছে না। যা উৎপাদন খরচের ২৫ ভাগ টাকাও উঠবে না। ভুট্টা চাষ করে নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন পাওনাদারদের পাওনা শোধ করবো কি করে এটা নিয়ে চিন্তায় আছি।

এ ব্যাপারে কোটালী বাজারের মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্সের মালিক ও নাবা কোম্পানির ডিলার সেলিম উদ্দিন বলেন, আমি সাড়ে ৯ টন নাবা ৫৫ জাতের ভুট্টার বীজ আমদানি করে চাষিদের কাছে বিক্রি করেছি। কোম্পানির লোক ফলনের ব্যাপারে যেভাবে আমাকে বলেছে, আমি চাষিদের সেভাবে বলেছি। এখন তো দেখছি চাষিরা চমরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমি কোম্পানির লোকজনকে খবর দিলেও তারা কোনোভাবেই আমার সাথে কিংবা চাষিদের সাথে দেখা করছে না। আমি এবং চাষিসহ আমাদের ১৬ কোটি টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। বীজ আমদানির সময় কোম্পানিকে নগদ ২০ লাখ টাকা দিয়েছি। যার রশিদ আমার সংগ্রহে আছে। আমি বাধ্য হয়ে চাষিদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকসহ কৃষি বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রয়োজনে আদালতের আশ্রয় নেবো। কারণ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা আমার ছাড়ছে না।

চুয়াডাঙ্গার কুশাডাঙ্গা বাজারের বীজ বিক্রেতা জুয়েল রানা বলেন, আমি ৭ লাখ টাকা পরিষোধ করে ৩ টন বীজ কিনে চাষিদের কাছে বিক্রি করেছি। কোটালী গ্রামের চাষিদের মতো আমার এখানেও চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমি কোম্পানির লোকজনকে খুঁজে পাচ্ছি না।

নাবা কোম্পানির মাঠ কর্মী রবিন হোসেন বলেন, আমি এখন বিপদে আছি। কারণ চাষিদেরকে এ বীজ লাগানোর জন্য আমি পরামর্শ দিয়েছিলাম। চাষিদের ক্ষতিগ্রস্তর বিষয়টি আমি আমার কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা কেউ মাঠ পর্যায়ে আসছে না।

এ ব্যাপারে কোম্পানির চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর জেলার এরিয়া ম্যানেজার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বীজ অনেক জয়গায় চাষ হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফাঙাস ডিজিজ হওয়ার কারণে। ডিলারদের মাধ্যমে আমরা চাষিদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। তবে কোটালী গ্রামে আমার যাওয়া হয়নি। ডিলারের সাথে যোগাযোগ রাখছি।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, আমি উপজেলা কৃষি অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি। চাষিদের বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন গ্রহণ করা হয়।

জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বীজ প্রত্যয়ন অফিসার ড. সুশান্ত কুমার তরফদারের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী চাষিরা।


একুশে সংবাদ//চু.প্র//এ.জে

Shwapno
Link copied!