চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় শুরু হয়েছে বরো ধান কাটার মহোৎসব।এবছরে ধানের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকেরা। একসাথে মাঠের সব ধান গুলো কাটার উপযুক্ত হওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ধান কাটার শ্রমিকেরা।এতে সঠিক সময়ে ধান কাটা ও মাড়ায় করার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না চাষিরা।ধান কাটার শ্রমিক পেতে হলে চাষিদের সপ্তাখানেক অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বৈরী আবহাওয়া আসার আগেই চাষিরা তাদের ধান ঘরে তোলার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু যথাসময়ে শ্রমিক না পাওয়ার কারনে ধান ঘরে তুলতে বিলম্ব হচ্ছে। এদিকে শ্রমিকদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারনে শ্রমিকেরা তাদের দৈনিক মজুরি আগের ছাড়া ১০০/২০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শ্রমিকেরা ফসলের মাঠে ও কৃষকের বাড়িতে চুক্তিভিত্তিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।এতে একজন শ্রমিক প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা রোজগার করছে।
এই এলাকার উথলী,আন্দুলবাড়িয়া, রায়পুর,হাসাদাহ, বাঁকা,মনোহরপুর ও সীমান্ত এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকেরা বরো ধান কাটার মহোৎসবে মেতে উঠেছে।কেউ আবার ধানের আটি বাঁধাছে কাউকে ধানের বোঝা মাথায় করে বহন করতে দেখা গেছে। অনেক মাঠের ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। স্থানীয় চাষিরা বলছেন,একই সময়ে ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ ও ধান কাটা চলছে।যার কারনে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেকের ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে।
উপজেলার এক ধান চাষি ধান চাষি তারিক হোসেন বলেন, `আড়াই বিঘা জমিতে বরো ধান চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে ধানের ফলন এবার অনেক ভালো হয়েছে। আমার এই ধান ৫/৬ দিন আগেই কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু জোন মুনিষ না পাওয়ার কারনে এতোদিন ধান কাটতে পারেনি।আবার ৪০০ টাকার মজুরি ৫০০ টাকা চাচ্ছে। জোন না পেয়ে আজ আমি আমার ছেলের সাথে নিয়ে ধান কাটতে এসেছি`।
ধান চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, `ধান কাটা ও মাড়ায় করার জন্য এখন খুব ভালো আবহাওয়া যাচ্ছে। এই মাসের শেষের দিকে আবার বৃষ্টি হওয়ার কথা শুনছি। যার কারনে তাড়াতাড়ি ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছি।এখানকার ধান কাটার শ্রমিকেরা খুব ব্যস্ত দিন পার করছে দেখছি।তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। তিনদিন পরে ধান কেটে দেবার কথা রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিবাদল নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
আরেক ধান চাষি মোমিন হোসেন বলেন,`আমার দুই বিঘা জমিতে এবার ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠের সব ধান একসাথে কাটা শুরু হয়েছে যার কারনে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আর কয়েকটা দিন যদি আবহাওয়া এমন থাকে তাহলে ধান ঘরে তুলে নিতে পারবো`।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অনেকের ধান ঘরে উঠে যাবে তখন আর শ্রমিক সংকট থাকবে না।
জীবননগর কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ৬,১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৬,২৬২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাসের বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এছাড়াও ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেলে কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ//জী.চু.প্র//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :