শেরপুর জেলার গারো পাহাড় সংলগ্ন সীমান্তবর্তী এলাকা—বিশেষ করে ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায়—প্রতি বছর ধান কাটা মৌসুমে বন্য হাতি ও মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই দ্বন্দ্বের ফলে প্রাণহানি, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি এবং হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
গারো পাহাড়ের বনভূমি উজাড় হওয়ায় হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংকুচিত হয়েছে। ফলে খাদ্যের অভাবে হাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে। ধান পাকতে শুরু করলে এর গন্ধ হাতিদের আকৃষ্ট করে এবং খাদ্যের লোভে তারা ফসলের মাঠে ঢুকে পড়ে, ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
কৃষকরা ফসল রক্ষার চেষ্টা করলে অনেক সময় মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে কৃষকের প্রাণহানি, আহত হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, এবং হাতিও আহত বা নিহত হয়।
গত এক দশকে হাতির আক্রমণে শিশুসহ ২৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। একই সময়ে গর্তে পড়ে কিংবা মানুষের তৈরি বৈদ্যুতিক ফাঁদে ২৭টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।
হাতির আক্রমণে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৩ লাখ টাকা, আহতদের চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা এবং ফসলের ক্ষতির জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়। তবে এই ক্ষতিপূরণ পেতে ভুক্তভোগীদের নানা ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়।
শেরপুরে ধান কাটা মৌসুমে হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনা, কার্যকর উদ্যোগ এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত করাই ভবিষ্যতের জন্য টেকসই সমাধান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :